২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর চেন্নাইতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন মনোজ তিওয়ারি। কিন্তু বিস্ময়করভাবে অমন ম্যাচজয়ী একটা ইনিংস খেলার পরও পরের ১৪টি ম্যাচ মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে। সে সময় ভারতের অধিনায়ক ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতের জার্সি গায়ে বরাবরই ব্রাত্য থাকা তিওয়ারির ক্যারিয়ার জুড়ে আক্ষেপ এটি নিয়েই।
তাই তো ক্রিকেট থেকে বিদায় বেলায় ধোনির উপর পুষে রাখা ক্ষোভ আর আটকাতে পারলেন না তিনি। জীবনের শেষ ম্যাচ বাংলা দলকে জিতিয়ে সেই ক্ষোভের কথাই জানালেন বাংলার অধিনায়ক। তবে ঠিক কী নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে মনোজের? ইডেন গার্ডেনসে শেষ রঞ্জি ম্যাচ খেলার পর সে কথাই জানালেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি সময় পেলে পরে ধোনিকে জিজ্ঞাসা করব, কেন ওই সময় আমাকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। আমি সেই সময় সেরা ছন্দে ছিলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভাল খেলেছিলাম। দারুণ ছন্দে ছিলাম। কিন্তু সেটা হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হল। সেই দুখটা থাকবে সব সময়।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩০ সেঞ্চুরির পাশাপাশি ১০ হাজারের ওপরে রান করেছেন তিওয়ারি। কিন্তু ভারতের হয়ে কখনোই টেস্ট খেলা হয়নি তাঁর। এই আক্ষেপটাও রয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারে। তবে তাঁর মতে আক্ষেপের চেয়ে পাওনা ছিল বেশি। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার আক্ষেপ থেকে বেশি পাওনা ছিল বলে মনে করি। আমি টেস্ট খেলতে পারিনি। এটা নিয়ে দু:খ থাকবে।’
এ ছাড়া বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে কখনোই রঞ্জি শিরোপা না জেতার আফসোসও ফুটে ওঠে তাঁর কন্ঠে। সর্বশেষ আসরে ফাইনালে গিয়েও রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বাংলাকে। এরপরই মূলত অবসরের ঘোষণা দেন তিওয়ারি। যদিও অবসর ভেঙে আবার মাঠে ফেরেন তিনি। কিন্তু এক মৌসুম বাদেই এবার আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণাই দিলেন এ ক্রিকেটার।
২০০৪ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তার সমাপ্তি ঘটলো ২০২৪-এ এসে। দীর্ঘ এ সময়ে বাংলার জার্সিতে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১৯ হাজারের বেশি রান করেছেন মনোজ। ৩০ সেঞ্চুরি ও ৪৫ হাফসেঞ্চুরিতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০১৬৫ রান রয়েছে তাঁর নামের পাশে। তবে শুধু রঞ্জি নয়, আইপিএলেও খেলেছেন তিনি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুই শিরোপা জয়ের নেপথ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন মনোজ।