মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ৮৫ মিটারের বিশাল এক ছক্কা। ধারাভাষ্য থেকে আমির সোহেল বলে উঠলেন, ‘দিস ম্যান ইজ নট হোল্ডিং ব্যাক!’
আসলে, তানজিদ হাসান তামিম এই ঘরানারই ব্যাটার। এই ধরণের ব্যাটাররা ফর্মে না না থাকলে দেখতে খুবই কুৎসিত লাগে। কিন্তু, যখন একবার তাঁরা ফর্ম ফিরে পান – তখন হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য।
হ্যাঁ, তামিম জুনিয়র ব্যাটের সুরটা খুঁজে পেয়েছেন। ফর্মের তালটা মেলাতে পারছেন। আর তার প্রভাবটা পাওয়া যাচ্ছে চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল)। সুর-তালটা ধরতে পেরেছেন বলেই ‘দিস ম্যান ইজ নট হোল্ডিং ইট ব্যাক’।
আগের ম্যাচে ৭০ করেছিলেন। আর এবার সেঞ্চুরি। পরিপূর্ণ এক টি-টোয়েন্টি ইনিংস। স্ট্রাইক রোটেশন কিংবা স্ট্রাইক রেট – সব কিছুতেই তানজিদ তামিম পাবেন পাশমার্ক। শুরুতে ‘শেকি’ ছিল চট্টগ্রাম।
দুই ওভারে চার রান তুলতেই এক উইকেট নেই। তামিম এরপর পাল্টা আক্রমণের মন্ত্রই নিয়েছিলেন। আর এরপর থেকে শুরু করে, যতবার চট্টগ্রাম উইকেট হারিয়েছে – ততবারই পাল্টা আক্রমণ করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে এমন যোগ্যতা বা সামর্থ্য সবার থাকে না।
টুর্নামেন্টে একটি সেঞ্চুরি-সহ দুটি হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন। সাথে একটা ৪৯ রানের ইনিংস আছে। মানে বিপিএলে মোটামুটি ধারাবাহিকই আছেন তিনি। কিন্তু, নির্বাচকদের তো বড্ড তাড়াহুড়া, সময়ের বেশ আগেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা করা হয়ে গেছে।
সেখানে জায়গা হয়নি তামিম জুনিয়রের। যদিও, তাতে আছে স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন বিদ্ধ মোহাম্মদ নাঈম কিংবা এনামুল হক বিজয়। কিন্তু, তানজিদের যে ফর্ম – তাতে বাঁ-হাতি এই ব্যাটারকে উপেক্ষা করার সুযোগ কোথায়!
দেশের সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সেরা ব্যাটার কেন থাকবেন না দেশের টি-টোয়েন্টি দলে? – এই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই।
গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপে কিংবা এশিয়া কাপে হয়তো একটু অপরিপক্ক অবস্থাতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটটা খেলা শুরু করতে বাধ্য হয়েছিলেন তানজিদ তামিম। তারপরও, বিশ্বকাপে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভাল শুরু পেয়েছিলেট। সেটা অবশ্য আলোচনায় আসার জন্য যথেষ্ট ছিল না। তবে, এখন পরিস্থিতিটা ভিন্ন।
তিনি টি-টোয়েন্টির জন্য অন্তত তৈরি হয়েই আছেন। তানজিদকে বিকশিত হতে দিন, তানজিদের বিকাশ হলেই টি-টোয়েন্টির মহাপুরনো জটিলতা থেকে হয়তো পারবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
তবে, আশার ব্যাপার হল – অন্তত ওয়ানডে দলে জায়গাটা আছে। মানে জাতীয় দলের রাডারেই আছেন তিনি। ফলে, টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পাওয়াটা এখন তাঁর জন্য স্রেফ সময়ের ব্যাপার। আর সেই সুযোগটা তিনি কাজে লাগাতে পারলে লাভ বাংলাদেশ দলেরই।