একটা প্রশ্ন দিয়েই শুরু করি। আচ্ছা বলুন তো, শেষ কবে তাইজুল ইসলাম খেলেছিলেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি? বলতে একটু সময় লাগবে। অন্তর্জালের দুনিয়াতে ঢু মারতে হবে। বাংলাদেশের নতুন অনুশীলন জার্সির মতই স্মৃতি খানিকটা ধূসর হয়ে যাবে। তবুও যেন মনে করা দায়।
কেননা প্রায় বছর পাঁচেক আগে শেষবারের মত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন তাইজুল ইসলাম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে সে ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে কোন উইকেট না পেলেও ৩২ রান খরচা করেছিলেন তাইজুল। যা যথেষ্ট ছিল জাতীয় দল থেকে ছিটকে যাওয়ার জন্যে।
এরপর তো রীতিমত তাকে বানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্রেফ টেস্ট ক্রিকেটার। রেডচেরি ছাড়া যেন তার হাতে অন্যকোন বল ওঠা মহাপাপের সামিল। উপেক্ষিত হয়েছেন তিনি পুরোটা সময় জুড়ে। উপেক্ষা মানুষকে দৃঢ় করে তোলে। উপেক্ষার শেষটায় মানুষ নতুন করে লড়াই করবার রসদ খুঁজে নেয়।
সে কাজটাই করেছেন তিনি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ করেছেন তিনি। ফরচুন বরিশালের হয়ে শিরোপা জয়ের উৎসবে মেতেছেন। পারফরম করেই তবে তিনি সেই উৎসবে সামিল হয়েছেন। ইকোনমিকাল বোলিংয়ের পাশাপাশি, উইকেট শিকার- সবকিছুই করেছেন সমানতালে।
৫.৬৫ ইকোনমি রেটে বোলিং করেছেন। আট ম্যাচে উইকেট বাগিয়েছেন ৯টি। এমন দারুণ পারফরমেন্সের কারণেই পুনঃরায় বহুদিন বাদে টি-টোয়েন্টি দলের দরজা খুলে গেল তাইজুলের। সিলেটে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্যে তাই নিজেকে প্রস্তুত করছেন তাইজুল ইসলাম।
সিলেটের নয়ানাভিরাম স্টেডিয়ামের মাঝে এদিন বাংলাদেশ দল অনুশীলন করেছে নতুন জার্সি গায়ে। নতুন স্পন্সরের লোগো খচিত অনুশীল জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন তাইজুলও। তারই দুই স্পিন বোলিং সতীর্থ শেখ মেহেদী ও রিশাদ হোসেনদের নিয়ে গা গরম করেছেন। নেট অনুশীলনে নিজেদের প্রস্তুত করেছেন। সতীর্থ ব্যাটারদেরও যথাসম্ভব প্রস্তুত করেছেন লঙ্কান স্পিনবিষ সামলে নেওয়ার জন্যে।
এরপর টুকটাক ব্যাটিং অনুশীলনও করেছেন তাইজুল ইসলাম। বর্তমান সময়ে অন্তত একটি স্কিল দিয়ে দলে টিকে থাকা বড্ড কঠিন। তাইতো টুকটাক ব্যাটিংটাও ঝালাই করে নিয়েছেন তাইজুল। তাতে করে অন্তত লেজের দিকে দলের পক্ষে কিছু রান অন্তত যুক্ত করতে পারবেন বা-হাতি এই বোলার।
মাত্র দুই ম্যাচেই থমকে গিয়েছিল তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার। সে ক্যারিয়ার আবার নতুন করে খুঁজে পাচ্ছে ফেরার পথ। এই পথটা অবরুদ্ধ হতে তিনি নিশ্চয়ই দিতে চাননা। তবে তেমনটা করতে হলে অন্তত তার প্রয়োজন হবে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ। সেটা তিনি আদোতে পাবেন কি-না সে প্রশ্ন থেকেই যায়।