ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল, ২৪১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শের পর স্টিভেন স্মিথের উইকেট হারিয়ে বসেছিল তাঁরা। কঠিন সেই মুহুর্তে, তীব্র চাপের বিরুদ্ধে সেদিন বুক ফুলিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন একজন ট্রাভিস হেড। ১৩৭ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলে দলকে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন তিনি।
ফাইনালের নায়ককে প্রাপ্য মর্যাদা দিতে ভুল করেনি আইপিএল। নিলামে তাঁকে নিয়ে হয়েছে কাড়াকাড়ি, শেষ পর্যন্ত বড় অঙ্কের পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ দলে নিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল হয়নি তা প্রমাণ করতে মোটেই সময় নেননি তিনি, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে স্রেফ ২৪ বলে করেছিলেন ৬২ রান। সবমিলিয়ে তিনটি ছয় আর নয়টি চার এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে।
ওপেনিংয়ে নেমে প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেছিলেন এই অজি তারকা। তখনি বোঝা গিয়েছিল দারুণ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। হয়েছেও তাই, পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাউন্ডারি বৃষ্টির জন্ম দিয়েছিলেন তিনি।
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন এই বাঁ-হাতি। সেসময় কেবল মাত্র ১৮ বল মোকাবিলা করেছেন। অবশেষে অষ্টম ওভারে গিয়ে থেমেছে তাঁর তান্ডব; জেরাল্ড কোয়েটজির বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। যদিও আউট হওয়ার আগে মুম্বাইয়ের বোলিং লাইনআপকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন, সেই সাথে দলকে তৈরি করে দিয়েছেন পাহাড়সম সংগ্রহের ভিত্তি।
অথচ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছিল বিশ্বকাপজয়ী এই ওপেনারকে। প্রথম ম্যাচ খেলতে না পারার জেদই বোধহয় এতটা বিধ্বংসী করে তুলেছে তাঁকে। তাঁর জেদের আগুনে পুড়ে ভস্ম হয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার দল; কি জানি, সামনের দিনগুলোতে আরো অনেক শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ হয়তো অসহায় আত্মসমর্পণ করবে এই ব্যাটারের সামনে।
হায়দ্রাবাদ অবশ্য এমনটাই চাইবে, পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ট্রাভিস হেডের এমন তান্ডব চলতে থাকলে নিশ্চিতভাবেই আরাধ্য ট্রফি জয়ের পথ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। তাছাড়া চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার ফর্মে থাকলে, দলের বাকিরাও পারফরম করার বাড়তি প্রেরণা পান।