চোকার নয়, এক ব্যাটিং বিপ্লবী ক্লাসেন

বিশ্বকাপ হোক কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ – দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটাররা বরাবরই আবির্ভূত হন চোকার্স রূপে। এমনকি আইপিএলেও গল্পটা একই, তীরে এসে তরি ডোবানোর অভ্যাস তাদের রক্তে মিশে আছে। এই তো কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে দুর্ধর্ষ একটা ইনিংস খেলেছিলেন হেনরিখ ক্ল্যাসেন, অসম্ভব একটা সমীকরণ মেলানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি।

অথচ শেষমেশ কি হলো, শেষ পাঁচ বলে প্রয়োজনীয় সাত রান আর নিতে পারেননি। সেদিন ম্যাচ জেতাতে না পারার জেদটা বোধহয় বুকের মাঝে লুকিয়ে রেখেছিলেন এই প্রোটিয়া তারকা। এরপর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে সামনে পেতেই উগরে দিলেন সব জেদ আর ক্ষোভ। টর্নেডোর মত করে উড়িয়ে দিয়েছেন দলটির বোলিং লাইনআপ।

পাঁচ নম্বরে নেমে মাত্র ৩৪ বল খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন এই উইকেটকিপার। এতটুকুই যথেষ্ট ছিল তাঁর জন্য, চার চারের সাথে সাতটি ছক্কার সাহায্যে করে ফেললেন ৮০ রান! তাঁর ২৩৬ স্ট্রাইক রেটের এই ইনিংসের কল্যাণে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ পেয়েছে ২৭৭ রানের পুঁজি। আইপিএলের ইতিহাসেই আর কোন দল পারেনি এত রান করতে।

ম্যাচের শুরু থেকেই হায়দ্রাবাদের ব্যাটাররা আগ্রাসন দেখিয়েছেন। ক্লাসেন যখন বাইশ গজে আসেন ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছিল ১৬১ রান, অথচ এগারোতম ওভার তখন শেষ হলো কেবল। টপ অর্ডারের গড়ে দেয়া ভিতের উপর দাঁড়িয়ে তান্ডবলীলা চালাতেই হতো তাঁকে। কোন ছাড় না দিয়ে সেটিই করেছেন তিনি।

২৩ বলেই এদিন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন এই ডানহাতি। কিন্তু এতে তুষ্ট হননি তিনি, আরো আক্রমণাত্বক হয়ে উঠেছিলেন। পরের ১১ বলে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ রান – আরেকটু স্পষ্ট করে বললে শেষ আট বল থেকেই ২৮ রান এসেছিল।

হার্ডহিটার হিসেবে হেনরিখ ক্লাসেনের সুনাম অজানা নেই কারো, মুম্বাইয়ের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্সের পর এই সুনাম আরো বাড়বে অনেকখানি। ফিনিশার হিসেবে তাঁর উপস্থিতি তাই একদিকে আত্মবিশ্বাসী করবে হায়দ্রাবাদকে, অন্যদিকে প্রতিপক্ষকে বাধ্য করবে আলাদা পরিকল্পনা করতে। যদিও পরিকল্পনা করে এই ছক্কা মানবকে থামানো যাবে এমন নিশ্চয়তা কেউই বোধহয় দিতে পারবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link