জাতীয় দলে ওয়ানডে ক্যারিয়ার স্থায়ী হয়েছিল দুই বছর, আর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের স্থায়ীত্ব মোটে দেড় বছর – ২০১৫ সালের পর ভারতের জার্সিতে আর দেখাই যায়নি মোহিত শর্মাকে। উপেক্ষিত ছিলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল); লম্বা একটা সময় তাই মূল ধারার ক্রিকেট খেলতে পারেননি তিনি।
তবে দেরীতে হলেও ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে; ২০২৩ সালে গুজরাট টাইটান্স সুযোগ দিয়েছিল তাঁকে আর সেই সুযোগে রূপকথা রচিত হয়েছে তাঁর হাত ধরে। রূপকথার গল্প চলমান আছে এবারের আইপিএলেও; বিধ্বংসী সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ প্রায় একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন এই পেসার; চার ওভার হাত ঘুরিয়ে মোটে ২৫ রান খরচ করেছেন, বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন তিন তিনটি উইকেট।
আগের ম্যাচে দুর্দান্ত এক ক্যামিও খেলা অভিষেক শর্মাকে এদিন প্রথম ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন তিনি। ইনিংসের শেষ ওভার করতে এসে টানা দুই বলে আবার শিকার করেছেন দুই উইকেট – মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ২৭৭ রান করা হায়দ্রাবাদ যে এদিন ১৭০ রানও করতে পারেনি সেটার কৃতিত্ব তাঁরই।
এই ডানহাতির শেষ ওভার আরেকটু ভালভাবে দেখা যাক, বাইশ গজে তখন ছিলেন দুই সেট ব্যাটার শাহবাজ আহমেদ ও আবদুল সামাদ। এরপর আবার ওয়াশিংটন সুন্দর এবং প্যাট কামিন্সকে বল করেছেন তিনি। অথচ টানা ছয় ছয়টি স্লোয়ার ডেলিভারি সবাইকে বোকা বানাতে একটুও সমস্যা হয়নি তাঁর; অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাসের অপূর্ব মিশেল যেন।
ডেথে এই তারকা বোলার গত আসর থেকেই গুজরাটের মূল ভরসা। পরিসংখ্যানও বলছে সেই কথা; গুজরাটের জার্সিতে সতেরো থেকে বিশ ওভারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২১ বল করেছেন তিনি। এসময় সতেরো উইকেট নিয়েছেন, খরচ করেছেন ১৬৪ রান। ৯.৬৪ বোলিং গড় আর ৮.১৩ ইকোনমি – অবিশ্বাস্য বললে মোটেই বাড়াবাড়ি হবে না।
টাইটান্স পরিবার অবশ্য ম্যাচ খেলানোর পরিকল্পনা করে দলে নেয়নি মোহিত শর্মাকে। নেট বোলার হিসেবেই ডাকা হয়েছিল, অথচ ভাগ্যের ছোঁয়া আর নিজের পরিশ্রমে ভর করে এখন তিনি দলটির অন্যতম সেরা বোলার। এজন্যই বোধহয় বলা হয়, ক্রিকেট জীবনের মত; পতন যেমন, আছে উত্থানও।