আইপিএলে মুস্তাফিজুর রহমানকে একাদশে না দেখলে নিশ্চয়ই খানিকটা রাগ লাগে; মুস্তাফিজ বাদ দিন, এমনিতেই নিজের প্রিয় ক্রিকেটার মাঠে না থাকলে খেলাটা ঠিকঠাক উপভোগ করা যায় না। সবসময় যে অফ ফর্মের কারণে কেউ বাদ পড়েন সেটা কিন্তু নয়, কখনো কখনো ম্যানেজম্যান্টের ইচ্ছেতেই বাইরে থাকতে যে কাউকে। আর এই ইচ্ছের পিছনে লুকিয়ে আছে জটিল সব হিসেব নিকেশ।
মূলত ইনজুরি শঙ্কার কারণেই কখনো কখনো ছন্দে থাকা ক্রিকেটারকে ম্যাচের একাদশে রাখা হয় না। যখন কেউ টানা খেলার মধ্যে থাকেন, তখন ঘুরেফিরে কয়েকটি কাজ একটানা করতে হয় – যেমন দৌড়ে দুই রান নেয়ার সময় মুহুর্তের মধ্যে দিক বদলানো কিংবা ফিল্ডিংয়ের সময় বাউন্ডারি লাইন থেকে জোরালো থ্রো করা। এসবের ফলে চোটের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
এই সম্ভাবনা অবশ্য নিরীক্ষা করা হয় ডাটা অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে। প্রত্যেকের অনুশীলনের ভিডিও, ম্যাচ ফুটেজ বিশ্লেষণ করেন কম্পিউটার এনালিস্টরা। এছাড়া হৃৎস্পন্দনের হার, রক্তচাপ, ঘুমের সময়সীমা ইত্যাদি নিয়েও কাজ করেন তাঁরা।
একটা সময় অবশ্য আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এ.আই এতটা শক্তিশালী ছিল না। তখন দক্ষ কোডারের সাহায্যে বিশ্লেষণ করা হতো ক্রিকেটারদের ফুটেজ। সেখান থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত থেকে ধারণা করা হয় কে চোটের কতটা কাছাকাছি রয়েছেন।
বলাই যায়, কোন ক্রিকেটারকে কারণ ছাড়া বিশ্রামে রাখা হয় না। বরং যখন মনে হয় ইনজুরি ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তখনি এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যাতে পরবর্তী কোন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কোন চোট শঙ্কা ছাড়াই নিজের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারেন তিনি – পরিচিত ভাষায় যাকে বলা হয় ওয়ার্কলোড ম্যানেজম্যান্ট।
ডাটা অ্যানলাইসিস থেকে প্রাপ্ত ফলাফল সবসময় সত্য হবে তা কিন্তু হয়। অনেক সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই হ্যামস্ট্রিং বা অ্যাসিএলের মত ইনজুরিতে পড়তে পারেন ক্রিকেটাররা। তবু প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে ডাটার উপর নির্ভরতা চোটের ঝুঁকি অনেকটা কমিয়েছে।
তাই তো নিজের প্রিয় তারকাকে মাঠে না দেখলে রাগ করার কোন কারণ নেই। হয়তো বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষার জন্যই তাঁকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।