বয়স বেড়েছে, টি-টোয়েন্টি সুলভ ব্যাটিং করতে জানেন না, পাওয়ার হিটিং সামর্থ্য নেই – বিরাট কোহলির নামে এমন কতকিছুই শোনা যায়। তবে তিনি মাঠে নামলেই দেখা যায় ভিন্ন চিত্র; চলতি আইপিএলেও কি অনায়াসে ধারাবাহিকভাবে রান করে যাচ্ছেন। যদিও দুইবার সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে ফিরতে আসতে হয়েছিল তাঁকে, এবার অবশ্য সেই আক্ষেপ মিটিয়েছেন – রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে পেয়েছেন নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম শতক।
চলমান আসরে রীতিমতো উড়ছেন এই ব্যাটার, সবশেষ রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে তাঁদের মাটিতে করেছেন ৭২ বলে ১১৩ রান। ১২ চারের সঙ্গে চারটি ছক্কায় অনবদ্য ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি।
শুরু থেকেই এদিন নিজের স্বাভাবিক ছন্দে ব্যাট করেছিলেন এই ডানহাতি; ভাল বলগুলো খেলেছেন দেখেশুনে আর বাজে বল পেলেই মাঠ ছাড়া করেছেন নান্দনিক সব শটে। পাওয়ার প্লের পর তাঁর রান তোলার গতি কিছুটা কমে এসেছিল বটে; হাফসেঞ্চুরি করতে মোকাবিলা করতে হয়েছিল ৩৯ বল।
তবে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরেই আগ্রাসী হয়ে উঠেন এই তারকা। নিয়মিত বাউন্ডারি হাঁকিয়ে এলোমেলো করে দেন রাজস্থান রয়্যালসের বোলিং লাইনআপকে। অর্ধশতককে শতকে রূপ দিতে তাঁকে খেলতে হয়েছিল মোটে ২৮ বল, আর নিজের ইনিংসের শেষ ৩৩ বলে করেছেন ৬১ রান।
যদিও ৬৭ বলে সেঞ্চুরি করা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। একজন ওপেনার শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকা মানেই দলীয় রান ২০০ ছাড়িয়ে যাওয়া, অথচ বেঙ্গালুরুর বোর্ডে জমা হয়েছে ১৮৩ রান। মূলত মাঝের ওভারে তাঁর রান তোলার গতি যথেষ্ট না হওয়াতেই প্রত্যাশিত পুঁজি পায়নি দলটি।
অবশ্য বিরাট কোহলিকে দোষ দেয়াটা বাড়াবাড়িই হবে; গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ক্যামেরন গ্রিনদের অফ ফর্মের কারণে বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইনআপ অনেকটাই ভঙ্গুর। তাই হয়তো বাড়তি ঝুঁকি না নিয়ে হিসেবি ব্যাটিংটাই করেছেন তিনি। তাছাড়া দলের একমাত্র জয় পাওয়ার ম্যাচেও সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার তাঁর ঝুলিতেই গিয়েছিল।
এবারের আইপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের জায়গাটা বিরাট কোহলির দখলে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়ান পরাগের সঙ্গে ব্যবধানটা অনেক বেশি। কোহলি কতটা ছন্দে আছেন সেই ব্যাপারটা তাই স্পষ্ট। অন্যদের ব্যর্থতায় দল বারবার হোঁচট খেলেও তিনি রান করে যাচ্ছেন নিরলস গতিতে; নিন্দুকদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তাঁর রান ক্ষুধা এখনো কমেনি।