‘ক্রিকেট ইজ অ্যা জেন্টলম্যান্স গেইম’ অর্থাৎ ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেট। কথাটির সত্যতার প্রমাণ রেখেছিলেন ইংলিশ ফাস্ট বোলার জেমস অ্যান্ডারসন। ভদ্রভাবেই দিয়েছিলেন মিশেল জনসনের স্লেজিংয়ের উত্তর। দুই দলের রেষারেষির মাঝেও সেদিন নিজের মস্তিষ্ক ঠান্ডাই রেখেছিলেন ইংলিশ পেসার।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। দুই দেশের মাঝে দৃশ্যত ব্যাট-বলের খেলা হলেও লড়াইটা মূলত সম্মানের। তাই তো জয়ের জন্য খেলোয়াড়েরা যেকোন কিছুই করতে রাজি। সে জন্যে প্রতিপক্ষকে স্লেজিংয়ের তীব্রতায় অতিষ্ঠ করে তুলতেও প্রস্তুত থাকেন প্রতিটা খেলোয়াড়।
কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই ইংলিশ শিবিরের অন্যতম সফল বোলার জেমস অ্যান্ডারসন। সচরাচর কথার যুদ্ধে জড়াতে দেখা যায় না তাঁকে। তবে যখন জড়ান তখন তা শিরোনামে পরিণত হয়। অতীতের ঘটনাগুলো তারই প্রমাণ দেয়। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার মিশেল জনসন একদম বিপরীত। তাঁকে প্রায়ই প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়াতে দেখা গিয়েছে।
২৪ বছর পর ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁদেরই মাঠে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় ইংল্যান্ড। জয়ের নেপথ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখেন অ্যান্ডারসন। পাঁচ ম্যাচে নেন ২৪ উইকেট। পার্থে তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই অস্ট্রেলিয়া হারায় ৬ টি উইকেট। স্ট্রাইকার হিসেবে ক্রিজে ছিলেন রায়ান হ্যারিস আর অপর প্রান্তে মিশেল জনসন।
কিছুটা চাপেই ছিল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা। তাইতো ইংলিশ বোলারদের মনোযোগ নষ্ট করতে চেষ্টা করেন জনসন। বোলিং করার জন্য যখন অ্যান্ডারসন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই জনসন করেন স্লেজিং। তিনি অ্যান্ডারসনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বন্ধু, এখন এত বকবক করছ কেন? উইকেট তো পাচ্ছো না!’ আর ঐ বলেই বোল্ড আউট করে হ্যারিসকে সাঝঘরে ফেরান অ্যান্ডারসন। আর জনসনের উদ্দেশ্যে ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ থাকার নির্দেশ করেন।
মূলত প্রতিপক্ষের মনোযোগ নষ্ট করার উদ্দেশ্যেই স্লেজিং করেন খেলোয়াড়েরা। কেউ কেউ হয় স্লেজিংয়ে কাবু। আবার অ্যান্ডারসনের মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা স্থির মস্তিষ্কে দেয় স্লেজিংয়ের উত্তর। আবার দৃঢ়তার পরিচয় দেখান কেউ কেউ। সেদিন নিজের অটল মানসিকতার পরিচয় দিয়ে কথার লড়াইটা শেষ অবধি জিতে নিয়েছিলেন অ্যান্ডারসন।