প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২১ গড়ে করেছেন ৫৬৬ রান, টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ১০২ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১০৬ রান – নিতীশ কুমার রেড্ডির ঘরোয়া অঙ্গনে পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যান এটি। মোটেই প্রশংসনীয় নয়, তবু প্রতিভাবান এই ক্রিকেটারের উপর ভরসা রেখেছিল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ২০২৩ সালের আইপিএল নিলামে তাঁকে দলে নিয়েছিল তাঁরা; সেবার নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পাননি, তবে চলতি আইপিএলে সুযোগ পেয়েই আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন তিনি।
পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে মাত্র ৩৭ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেছেন নিতীশ। চার চারের পাশাপাশি পাঁচটি বিশাল ছয়ের মারে এই ইনিংস সাজিয়েছেন তিনি। বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতা সত্ত্বেও তাঁর পারফরম্যান্সে ভর করেই ১৮২ রান করতে সক্ষম হয়েছে প্যাট কামিন্সের দল।
এই ব্যাটার যখন বাইশ গজে আসেন তখন ২৭ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল হায়দ্রাবাদ। খানিক পরে আরো একটা উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছিল দলটি। তবে তীব্র চাপের মুখেও তিনি ভেঙে পড়েননি। উল্টো রাহুল ত্রিপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন, এরপর হেনরিখ ক্লাসেনের সঙ্গে জুটি গড়ে যোগ করেন আরো ৩৬ রান।
ততক্ষণে দলীয় রান শতকের ঘরে প্রবেশ করেছিল, যদিও বড় সংগ্রহের স্বপ্ন তখন দেখার সাহস ছিল না কারো মনেই। কিন্তু এই ডানহাতি স্রোতের বিপরীতে লড়াই করেছেন, তান্ডব চালিয়েছেন বোলারদের ওপর। পনেরোতম ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের প্রথম আইপিএল হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি, আর সবমিলিয়ে সেই ওভারে আদায় করেন ২২ রান।
এরপর অবশ্য বেশিদূর এগুতে পারেননি এই অলরাউন্ডার, আর্শ্বদীপ সিংয়ের চতুর্থ শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তাঁকে। তবে আউট হওয়ার আগে দলকে ঠিকই লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিয়েছেন তিনি; সেই সাথে চিনিয়েছেন নিজের জাত।
ক্রিকেটীয় বিনোদন ছাড়া আইপিএলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য বোধহয় উদীয়মান তরুণদের লাইমলাইটে পৌঁছে দেয়া। হার্দিক পান্ডিয়া, জাসপ্রিত বুমরাহ থেকে শুরু করে সুরিয়াকুমার যাদব কিংবা তিলক ভার্মা সবাই আইপিএল দিয়েই তারকা হয়ে উঠেছেন। নিতীশ রেড্ডিও নিশ্চয়ই তাঁদের পথে হাঁটতে চাইবেন; তবে সেজন্য তাঁকে হতে হবে আরো ধারাবাহিক, আরো পরিশ্রমী আর একাগ্র।