টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রোহিত-বিরাট ওপেনিং জুটি!

বিরাট কোহলি, নামের মতই যেন বিরাট এক চরিত্র তিনি নিজে। ক্রিকেট ময়দানে অটুট মানসিকতার এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন তিনি। দেখিয়েছেন একাগ্রতা আর পরিশ্রমের মিশ্রণে কি করে শাসন করা যায় পুরো ক্রিকেট বিশ্ব।

অথচ সেই বিরাট কোহলিকে সাম্প্রতিক সময়ে করা হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ। তার স্ট্রাইকরেট নিয়ে করা হচ্ছে সমালোচনা। ভারত দলে তার জায়গা এখন নাকি বেশ নড়বড়ে। এসব নিয়ে অবশ্য বিরাট খুব একটা মাথায় ঘামাননা। তিনি ক্যারিয়ারের শেষ বেলাতেও ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ নিবেদন দেখিয়ে যাচ্ছেন। নতুন এক সম্ভাবনার প্রদীপও জ্বালিয়েছেন তিনি।

ক্রিকেট বিশ্বে এখন সবাই ব্যস্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত দলে কোন কোন খেলোয়াড়ের জায়গা হবে- তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। সেই সাথে পরখ করে নেওয়ার জন্যে সর্বোত্তম মাধ্যম হিসেবে রয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। আর সেখানে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বিরাট কোহলি।

আর ঠিক সে কারণেই নতুন সম্ভাবনা উদিত হয়েছে। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিরাটকে নীল জার্সিতে দেখা যাবে ভিন্ন রোলে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে চলতি আইপিএলে ওপেনিং করছেন বিরাট। ৭ ম্যাচে ৩৬১ রান করেছেন তিনি। দলগতভাবে সফলতার দেখা পাচ্ছে না ব্যাঙ্গালুরু, সে কথা সত্য। তবে বিরাট ব্যক্তিগতভাবে আপ্রাণ চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন।

এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে একটি সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে। যদিও ধীরলয়ের সেই সেঞ্চুরিতেও বেশ কটু কথাই হজম করতে হয়েছে বিরাটকে। কেউ বিবেচনায় নেয়নি পরিস্থিতি। এছাড়াও দুইটি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে তার নামের পাশে। আইপিএলে ৭২ গড়ে রান আসছে তার ব্যাট থেকে।

আর যেই স্ট্রাইকরেট নিয়ে বিরাটের সমালোচনা হচ্ছে প্রতিনিয়ত, সেই স্ট্রাইকরেটেও উন্নতি সাধনের পথেই রয়েছেন বিরাট। ১৪৭ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাট চালাচ্ছেন তিনি ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে। তবে এবারের আইপিএল নয় শুধু, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে এলেই যেন বিধ্বংসী এক বিরাটের দেখা মেলে।

এখন অবধি ভারতের জার্সিতে তিনি নয়টি ম্যাচে ওপেনিং পজিশনে খেলেছেন। নীল জার্সি গায়ে রান করেছেন ঠিকঠিক ৪০০। এই পজিশনে জাতীয় দলের জার্সিতেও রয়েছে একটি সেঞ্চুরি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০২২ সালের এশিয়া কাপে ১২২ রানে ছিলেন অপরাজিত। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এটিই যে ভারতীয় ব্যাটারদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর।

তাছাড়া ওপেনিং পজিশনে নামলেই যেন বিরাটের স্ট্রাইকরেটে আসে আমুল পরিবর্তন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে বিরাট রান করেছেন ১৩৮.১৫ স্ট্রাইকরেট। সেই বিরাট ওপেনিং পজিশনে খেলা নয়টি ম্যাচে রান করেছেন ১৬১.৩ স্ট্রাইকরেটে।

দুইটি ফিফটি সেখানেও রয়েছে। অপরাজিত ছিলেন দুইটি ইনিংসে। তাতে করে গড়ও বেশ সমৃদ্ধ। ক্যারিয়ার গড় যেখানে ৫১ সেখানে ওপেনিং পজিশনে তার গড় ৫৭। সুতরাং সামগ্রিক চিত্র বিরাটের পক্ষেই কথা বলছে। তবে ওপেনিং পজিশনে বিরাটকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করা বেজায় কঠিন এক কাজ। তরুণ বহু ব্যাটারই সেই পজিশনে সুযোগ পাওয়ার দাবিদার।

তবে বৃহৎ দৃষ্টিকোণে, শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে বিরাটের অভিজ্ঞতা কাজে লাগতে পারে ভারতের। সেদিক বিবেচনায় একটা ঝুকি হয়ত নিয়েই ফেলতে চাইবে অজিত আগারকারের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় নির্বাচক প্যানেল। এখন স্রেফ সঠিক সময়ের অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link