জায়গাটা অদল-বদল করলেন। তবে নিজের চিরায়ত রুপের বদল হল না বাবর আজমের। আয়ারল্যান্ডের মাটিতেও একটা অর্ধশতক তুলে নিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। রান করবার কাজটা ভালভাবেই করতে জানেন। সে প্রমাণ রেখেছেন সুদূর আয়ারল্যান্ডেও।
বিশ্বকাপ সফরে বেড়িয়ে পড়েছে পাকিস্তান। সে সফরের প্রথম পর্যায়ে আয়ারল্যান্ডে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাবর আজমের দল। সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচেই খানিকটা চমকে দিলেন যেন। ওপেনিং পজিশনটা ছেড়ে দিলেন দীর্ঘদিনের সঙ্গী মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। তিন নম্বরে ব্যাট করতে এলেন বাবর।
তবে বেশ দ্রুতই বাইশ গজে নামতে হয়েছিল তাকে। কেননা অনাকাঙ্ক্ষিত এক রানআউটের শিকার হতে হয়েছে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। তিন নম্বরে নেমে বাবর হাল ধরার কাজটা করলেন। অপরপ্রান্তে সাইম আইয়ুব হাত খুলেই ব্যাট চালিয়েছেন। বাবর আস্থার জোগান দিয়েছেন।
সেই আস্থার প্রতীক হয়ে স্মিত গতিতে নিজের ব্যক্তিগত ফিফটির দিকে এগিয়ে যান বাবর আজম। অবশেষে নিজের খেলা ৩৯ তম বলে গিয়ে নিজের ফিফটির দেখা পান। ১২৫ এর আশেপাশে স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করছিলেন বাবর। পঞ্চাশ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়ার পর খানিকটা হাত খুলে খেলার প্রচেষ্টাই করেছেন বাবর। যদিও সেই প্রচেষ্টা আলোর মুখ দেখেনি।
ফিফটির পর স্রেফ ৭ রান তিনি যুক্ত করতে পেরেছেন পরবর্তী ৪ বলে। এরপরই ধরতে হয়েছে তাকে প্যাভিলিয়নের পথ। তবে আশার বিষয় একেবারে মোক্ষম সময়ে ধারাবাহিক হতে শুরু করেছেন বাবর। এর আগে বেশ লম্বা সময় ধরেই ধারাবাহিকভাবে রান পাচ্ছিলেন না ডানহাতি এই ব্যাটার।
কিন্তু বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তেই আবার যেন সেই চিরচেনা বাবরের মিলছে দেখা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি তৃতীয় সর্বোচ্চ রান করা ব্যাটার নিত্যদিন রানের মধ্যেই থাকবেন, সেটাই যে প্রত্যাশিত। তবুও একটা প্রশ্ন অবশ্য থেকেই যাচ্ছে।
বাবরের ব্যাটিং ধরণ কিংবা তার স্ট্রাইকরেট। ১৩৫ স্ট্রাইকরেটের একটা ইনিংস তিনি খেলেছেন আইরিশদের বিপক্ষে। আয়ারল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ঠিকঠাক স্ট্রাইকরেট। যদিও তার উপর দায়িত্ব থাকে ইনিংসের হাল ধরবার। তবুও আরেকটু আগ্রাসী অন্তত হতেই পারতেন বাবর আজম। তেমনটি হতে না পারলে বরং আসন্ন বিশ্বকাপে তা বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে পাকিস্তানের জন্যে।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বেশ বদলে গেছে বলেই ধারণা সকলের। সেটা অবশ্য খুব একটা মিথ্যে নয়। বদলে যাওয়ার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রতিটা ব্যাটারই দ্রুত রান তুলতে চান। স্বল্প বল খেলেই অধিক রান করবার প্রবণতা সবার মাঝেই।সেদিক থেকে বাবর আজমের মত একজন ধারাবাহিক ব্যাটার পিছিয়ে পড়বেন সেটা মেনে নেওয়া দুষ্কর। যদিও বাবরের ইনিংসগুলো নিয়ে খুব একটা চিন্তিত মনে হয় না পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টের।
কেননা পাকিস্তানের মিডল অর্ডার যে একেবারেই নড়বড়ে। সেখান থেকে ধারাবাহিকভাবে কখনোই বড় রানের দেখা মেলেনা। যেমনটি ঘটেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ঠিক একারণেই বাবরকে নিয়ে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টের নেই কোন অভিযোগ। বাবরও তাই খানিকটা নির্ভার হয়ে হেলেদুলে দলের রান বাড়ানোর কাজটা করছেন নিয়ম মেনে।