রিজওয়ান, বারংবার পাকিস্তানের বাঁচান মান

মোহাম্মদ রিজওয়ান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ডন ব্র্যাডম্যান। এমনটাই বলেছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। খানিকটা মজার ছলে বললেও এই কথা একেবারেই মিথ্যে নয়। ধারাবাহিকভাবে রান করতে তিনি সিদ্ধহস্ত। দলকে যে কতবার খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেছেন, তার তো কোন ইয়ত্তা নেই। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও দলের মান বাঁচিয়েছেন রিজওয়ান।

টি-টোয়েন্টিতে প্রায় পঞ্চাশ গড়ে রান করে চলেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। নিয়ম করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাসে তার ব্যাট। নিয়ম করে রান করতে বেজায় পছন্দ করেন তিনি। তবে সবচেয়ে পছন্দ সম্ভবত তার চাপের মুখে রান করা। এমন আরও একটি দিনে শতভাগ সফল রিজওয়ান।

আয়ারল্যান্ডের ব্যাটারদের দারুণ ব্যাটিংয়ের কল্যাণে ১৯৩ রানের বিশাল এক লক্ষ্যমাত্রা পায় পাকিস্তান। বৃষ্টি শেষে ব্যাট করতে নেমে বিপাকে পড়ে যায় সফরকারীরা। মাত্র ১৩ রানের মাথায় দুই উইকেটের পতন ঘটে পাকিস্তানের। সাইম আইয়ুবের পর অধিনায়ক বাবর আজমও ফিরে যান দ্রুতই।

এরপরই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন রিজওয়ান। তার উপর অর্পিত থাকে অ্যাংকরিংয়ের দায়িত্ব পালন করা। তিনি একটা প্রান্ত আগলে রাখবেন, অপরপ্রান্তের ব্যাটারকে হাতখুলে খেলার ভরসা জোগাবেন। এদিনও দক্ষতার সাথেই এই কাজটা করে গেছেন তিনি।

তবে তাই বলে যে একেবারেই রক্ষণাত্মক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি তেমনটি নয়। ফখর জামানের সাথে গড়ে তোলেন ১৪০ রানের জুটি। সেই জুটিতে ফখর রান তুলেছেন ১৯০ স্ট্রাইকরেটে। আর রিজওয়ান রান করেছেন ১৫০ স্ট্রাইকরেটে।

ইনিংস বিল্ডআপ মানে খোলস বন্দী হয়ে যাওয়া নয়, সেটিই যেন দেখিয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যেখানে পরাজয়ের শঙ্কা ছিল দৌদুল্যমান, সেই ম্যাচটিও রিজওয়ানের দৃঢ়তায় নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান। রিজওয়ান জয় নিয়েই তবে মাঠ ছেড়েছেন।

শেষ অবধি অপরাজিত থেকেছেন তিনি। ৭৫ রানের ইনিংসটিতে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা হাকিয়েছেন রিজওয়ান। ১৬৩ স্ট্রাইকরেটের ইনিংসটি তার উপর অর্পিত দায়িত্বের যথাযথ প্রতিপালনের প্রতিচ্ছবিই ফুটিয়ে তোলে। রিজওয়ানের ব্যাট রান এলেই যেন হেসে খেলে জয় পায় পাকিস্তান।

এদিন তার দৃঢ়তা পুরো পাকিস্তান শিবিরে ছড়িয়েছে আত্মবিশ্বাস। তাইতো নড়বড়ে আত্মবিশ্বাসের আজম খান খেলে গেছেন ৩০০ স্ট্রাইকরেটের ইনিংস। ১০ বলে ৩০ রানের ছোট্ট তাণ্ডবে আইরিশদের সমস্ত জয়ের পরিকল্পনা লণ্ডভণ্ড করেছেন আজম খান। অপরপ্রান্ত থেকে রিজওয়ান যেন স্মিত হাসিতে দেখেছেন সেই লীলা।

তার গড়ে দেওয়া ভীতের উপর দাঁড়িয়ে যেকোন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ম্যাচ জয়ের সামর্থ্য রাখে। তেমনটিই প্রমাণিত হয়েছে আরেকটিবার। দায়িত্বশীল একটা ইনিংস যে গোটা দলকে উজ্জীবিত করে তুলতে পারে সেটি আবারও বোঝালেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রিজওয়ান হবেন আরও বেশি ধারাবাহিক, তেমনটি এখন প্রত্যাশা পাকিস্তান সমর্থকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link