ছিলেন রঞ্জি ট্রফির একচ্ছত্র অধিপতি, একের পর এক শিরোপা জিতে ভারী করেছেন অর্জনের ঝুলি। এরপর তাঁকেই নিয়ে আসা হয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল), মঞ্চ বদলালেও আজন্ম শিরোপার নেশায় মেতে থাকা মানুষটা বদলাননি।
মাত্র দুই বছরের মাথায় পেয়ে গেলেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ – বলছি কলকাতা নাইট রাইডার্সের কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের কথা।টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপট দেখিয়ে গিয়েছে কলকাতা, ফাইনালেও অব্যাহত ছিল তাঁদের আধিপত্য।
সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়ে তৃতীয়বারের মত আইপিএলে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পেল তাঁরা। আর এসবের পিছনে নীরবে অবদান রেখেছেন হেড কোচ চন্দ্রকান্ত।
অথচ সূচনাতে কি বাজে অভিজ্ঞতা-টা হয়েছিল তাঁর, নক আউটের পর্বের দৌড়েই দলকে রাখতে পারেননি তিনি। ১৪ ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছিলেন কেবল ছয়টিতে, পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান ছিল সাত নম্বরে। তবু তাঁকে ঘিরেই পরের আসরের পরিকল্পনা গড়েছিল রাইডার্স পরিবার।
ভরসার প্রতিদান কি দারুণভাবেই না দিলেন এই বাঙালি ক্রিকেটগুরু। সাদাসিধে বেশভূষা আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও গোল খাইয়ে ছাড়লেন প্রতিপক্ষের শিবিরে বসে থাকা বাঘা বাঘা ক্রিকেট মস্তিষ্ককে।
ক্রিকেটারদের সঙ্গে বন্ধুর মতই মিশেছেন তিনি; আবার বাবার মত শাসন করেছেন, ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। তাই তো স্বয়ং শাহরুখ খান নিজেও ধন্যবাদ দিয়েছে তাঁকে।
মিলিটারি কোচ হিসেবে আলাদা একটা খ্যাতি আছে চন্দ্রকান্তের। খেলোয়াড়দের কঠিন নিয়মের মাঝে রাখতেই পছন্দ করেন তিনি, সেজন্য সমালোচনাও শুনতে হয়েছে কত কত জায়গা থেকে। কিন্তু নিজের আদর্শে স্থির ছিলেন তিনি, চূড়ান্ত সফলতাও মিলেছে তাই।
তিনটি ভিন্ন রাজ্যের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন এই কোচ। রঞ্জির ইতিহাসে তাই তাঁকে ‘স্যার অ্যালেক্স ফারগুসন’ বলা হয়। আইপিএলেও এবার শিরোপা জেতার মন্ত্র জেনে গেলেন তিনি।
এখন কেবল সেই মন্ত্র পড়ে যাওয়ার পালা, সেটা করতে পারলে হয়তো ভারতীয় ক্রিকেটাঙ্গনের ফারগুসন বলতে হবে তাঁকে।