বাবা ছিলেন ডানহাতি ফাস্ট বোলার। ছেলে বনে গেলেন বা-হাতি স্পিনার। বাবা খেলেছিলেন নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে। ব্ল্যাকক্যাপস কিংবদন্তি ক্রিস প্রিঙ্গেলের ছেলে গায়ে চাপিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের জার্সি। ছেলে নাকি বাবার মতই হয়। টিম প্রিঙ্গেল ঠিক বাবার উলটো। কমলা রঙে নিজের বিশ্বকাপ যাত্রাটাও করলেন তিনি দারুণভাবে। চোখের সমস্যাও দমাতে পারেনি টিম প্রিঙ্গেলকে। চমশা চোখে প্রতিপক্ষের চোখ করেছেন ছানাবড়া।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা আর বাংলাদেশকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেছিল নেদারল্যান্ডস। সেটারই সুবাদে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁদের নিয়ে প্রত্যাশা বেশি সবারই। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেপালকে অল্প রানেই অলআউট করে এমন প্রত্যাশাকে যৌক্তিক প্রমাণ করতে চাইলেন ডাচ বোলাররা, বিশেষ করে টিম প্রিঙ্গেল শুরুতেই প্রতিপক্ষকে খাদের কিনারায় ঠেলে দিয়েছেন।
এবারের বিশ্বকাপে স্পিনাররা সুবিধা পাবেন এমনটা শোনা যাচ্ছে সবখানেই। সেজন্যই হয়তো নতুন বলে এই স্পিনারকে সুযোগ দেন নেদারল্যান্ডসের দলপতি, তাঁর সেই সিদ্ধান্ত দারুণভাবে কাজে লেগেছে।
সবমিলিয়ে এদিন চার ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র বিশ রান খরচ করেছেন এই বাঁ-হাতি, বিনিময়ে শিকার করেছেন তিন তিনটি উইকেট। তাঁর এমন বোলিংয়ের কারণেই ধস নেমেছিল নেপালের ব্যাটিং লাইনআপে, পুরো ইনিংস জুড়ে তাঁকে কোন জবাবই দিতে পারেনি দলটির ব্যাটাররা।
ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই আক্রমনে আসেন প্রিঙ্গেল, প্রথম বলে অবশ্য চার হজম করতে হয়। কিন্তু এরপরই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান তিনি, সেই ওভারে টানা তিনটি ডট আদায় করেন আর শেষ বলে তুলে নেন আসিফ শেখের উইকেট।
ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারেও উইকেটের দেখা পেয়েছেন এই ডাচ, এবার তাঁর শিকার অনীল শাহ। তৃতীয় ওভারে উইকেট না পেলেও নিজের শেষ ওভার করতে এসে ঠিকই স্কোরবোর্ডে নাম তোলেন তিনি, আউট করেন নেপালি অধিনায়ক রোহিত পোড়েলকে। ৩৫ রানে ব্যাট করা এই সেট ব্যাটারের উইকেট ম্যাচের গতিপথ অনেকটা বদলে দিয়েছে।
সবমিলিয়ে প্রশংসনীয় পারফরম্যান্সই বটে। ছোট দলের বড় তারকা হিসেবে বিশ্ব মঞ্চে নিজের জাত চেনালেন তিনি। এখন পালা আরো ক্ষুরধার এবং ধারাবাহিক হয়ে উঠার। নেদারল্যান্ডসের দলীয় প্রত্যাশা পূরণে এমন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবেই তাঁকে, কেননা দলটির বোলিং বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র গুলোর একজন এই ক্রিকেটার।