মায়াবী মিলার, খোলস বদলে ম্যাচ উইনার

জীবন যখন আপনাকে হিংস্র প্রাণীর মুখে ঠেলে দেয়, যখন একের পর এক বাউন্সারে আহত করতে চায়, আপনাকে তখন সাহসী হয়েও নিজের খোলস বদলে পালিয়ে বেড়াতে হয় – সবসময় ডাউন দ্য উইকেটে আসলেই সমস্যা দূর হয় না। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ডেভিড মিলারও ঠিক একই পরিস্থিতির মাঝে পড়েছেন, সতীর্থদের ব্যর্থতায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। আর সে সময় নিজের স্বভাব বদলেই নায়ক হয়েছেন তিনি।

‘কিলার মিলার’ নামটা বড্ড পরিচিত; উইকেটে আসলেই চামড়ার বলটাকে বেধড়ক পিটুনি দিবেন এমনটাই প্রোটিয়া ব্যাটারের খেলার ধরন। কিন্তু ডাচ বোলারদের সাঁড়াশি আক্রমণে পিছু হটতে হয়েছিল তাঁকে, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। তবু অহেতুক সাহস দেখাননি তিনি; বরং ধৈর্য ধরে সময়ের অপেক্ষা করেছেন। এরপর সুযোগ পেয়েই আঘাত হেনেছেন প্রতিপক্ষের বুকে।

মাত্র দুইজন ব্যাটারের দুই অঙ্কের ইনিংস খেলার দিনে ৫১ বলে ৫৯ রান করেছেন এই বাঁ-হাতি। এমন ইনিংস অন্য কোন দিন খেললে হয়তো তিনি নিজেই নিজের ওপর রাগ করতেন বোধহয়, কিন্তু এবারের পারফরম্যান্সকে হয়তো অনেকদিন মনে রাখবেন। কেননা ১২ রানে চার উইকেট হারানো দলটা তাঁর কাঁধে ভর করেই তো বেঁচেছে কমলা দস্যুদের হাত থেকে।

নিউইয়র্কের নাসাউ স্টেডিয়ামে খেলা মানেই লো স্কোরিং থ্রিলার, ব্যতিক্রম হয়নি নেদারল্যান্ডস বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচেও। আগে ব্যাট করে ১০৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল স্কট এডওয়ার্ডসের দল, কিন্তু নাগালের লক্ষ্যে হাত বাড়াতে গিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার লেজে গোবরে অবস্থা হয়ে পড়ে।

তবে একজন মিলার ছিলেন বলেই রক্ষা পেয়েছে তাঁরা, ট্রিস্টান স্টাবসকে নিয়ে ৬৫ রানের সংগ্রামী একটা জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। শেষদিকে আবার স্টাবস, জানসেন দ্রুত বিদায় নিলেও মুহুর্তের জন্যও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তাঁর হাত থেকে নিতে পারেনি নেদারল্যান্ডস।

উনিশতম ওভারে একাই ১৬ রান করে এই হার্ডহিটার নিশ্চিত করেন দুই পয়েন্ট। সেই সাথে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। পর পর দুইটি বিশ্বকাপে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হারার পর হ্যাটট্রিক পরাজয়ের অপেক্ষায় থাকা প্রোটিয়াদের সম্মান বাঁচাতে যা করেছেন এই তারকা সেটি অতিমানবীয় বিশেষণে বিশেষায়িত না করলে অন্যায় হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link