সমালোচনা ছিল, সেই সমালোচনা তিরস্কারে পরিণত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচের পর। সুপার ওভারে যে তার হাতেই ছিল স্বল্প রান দেওয়ার দায়িত্ব। তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন সেদিন। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে মোহাম্মদ আমির ব্যর্থ হলেন না। তিনি দেখিয়ে দিলেন একেবারেই নি:শেষ তিনি হয়ে যাননি।
নিজের করা প্রথম ওভারেই দারুণ কিছু করে দেখানোর প্রত্যয় দেখিয়েছেন আমির। বল হাতে সুইংয়ের দেখাও পাচ্ছিলেন। উইকেটে থাকা দুই বা-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে খুব একটা বিপাকে পড়তে হয়নি তাকে। অসাধারণ সব সুইং বলে উইকেট না পাওয়ার আক্ষেপ তো নিশ্চয়ই ছিল তার।
সেই আক্ষেপ ঘুচেছে তার করা তৃতীয় ওভারে। দিনটাই যে পাকিস্তানি বোলারদের। আমিরের মত অভিজ্ঞ বোলার পিছিয়ে কেন থাকবেন? উইকেটের তালিকায় নিজের নামটি তিনিও যুক্ত করে নিতে চাইলেন। পাকিস্তানের গলার কাটায় পরিণত হয়েছিলেন ঋষাভ পান্ত। ক্রস সিম বলে তাকে পরাস্ত করেন আমির। এরপর আরও একটি ক্রস সিম বলে আউট করেন রবীন্দ্র জাদেজাকে।
পরপর দুই বলে ভারতের দুই উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত হ্যাট্রিক তার করা হয়ে ওঠেনি। তবে ভারতের রানের চাকাকে একেবারে স্লথ করে দেওয়ার কাজ করেছেন তিনি। এই কাজটা আগের দিনও করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেও রানের বহমান নদীকে শুকিয়ে দিয়েছিলেন। ডেথ ওভারে হাফ সেঞ্চুরি করা মোনাঙ্ক প্যাটেলের উইকেট বাগিয়েছিলেন।
ভারতের বিপক্ষেও একই কাজ করেছেন। ৪২ রান করা ঋষাভকে ফিরিয়েছেন। শেষ দুই ওভারে মাত্র একটি বাউন্ডারি হজম করেছেন। আগের দিন দলের বাকি বোলাররা যেন সঙ্গ দিতে চাননি আমিরকে। তবে এদিন অবশ্য পাকিস্তানের বোলিং ইউনিট এক হয়েই ভারতকে চেপে ধরেছিল।
এদিন অবশ্য আরও আগেভাগেই উইকেটের দেখা পেতে পারতেন আমির। তার করা দ্বিতীয় ওভারেই দুইবার ক্যাচ উঠেছিল। স্লিপ কর্ডোনে ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হন ইফতাখার আহমেদ। দ্বিতীয় দফা সোজা উপড়ে উঠে যাওয়া বলটা তালুবন্দী করতে পারেননি উসমান খান। নতুবা আমিরের নামের পাশে উইকেটের সংখ্যাটা হয়ত দু’য়ে আটক থাকত না।
এদিনও দারুণ ইকোনমিক্যাল বোলিং করেছেন আমির। মাত্র ৫.৭৫ ইকোনমি রেটে রান খরচা করেছেন আমির। ২৩ রানের বিনিময়ে একটানা দুই উইকেট তুলে নেন। আগের দিনের ভুলটা এদিন তিনি করেননি। কোন প্রকার অতিরিক্ত রান তিনি দেননি। সেখানেই বরং সার্থকতা আমিরের।