এই তো সেদিন তাকে শুনতে হয়েছিল রাজ্যের কটু কথা। বর্ণবাদী মন্তব্যের জলে ভেসে যাচ্ছিলেন আর্শদ্বীপ সিং। বছর ঘুরতেই বদলে গেছে দৃশ্যপট। সেই আর্শদ্বীপ সিং এখন ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারতের হয়ে শ্রেষ্ঠ বোলিং ফিগার এখন আর্শদ্বীপের দখলে।
ইনিংসের প্রথম বলে উইকেট নিয়ে শুরু। এরপর নিজের কোটার শেষ ওভারেও পেয়েছেন উইকেটের দেখা। দিনটা যেন ছিল আর্শদ্বীপেরই। তাইতো ৪টি উইকেট হয়েছে তার নামের পাশে যুক্ত। আর সেটাই যে ছিল সবাইকে পেছনে ফেলে দেওয়ার জন্যে যথেষ্ট।
জিতলেই নিশ্চিত পরবর্তী রাউন্ড। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই পাকিস্তানকে হারিয়েছে, চমকে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। তাদের বিপক্ষে ম্যাচটা একেবারেই হালকা করে দেখবার সুযোগ নেই ভারতের সামনে। ভারত কিংবা আর্শদ্বীপ কেউই প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখেননি। তাইতো একেবারে ইনিংসের প্রথম বল থেকেই আঘাত ছিল চলমান।
রাউন্ডা দ্য উইকেট থেকে খানিকটা ইনসুইং ডেলিভারি। তাতে পুরোপুরি পরাস্ত হন যুক্তরাষ্ট্রের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীর। আর্শদ্বীপ এতটাই নিশ্চিত ছিলেন যে লেগ বিফোরের আবেদন না করেই শুরু করে দেন উদযাপন। তবে আম্পায়ার অবশ্য আঙুল উঁচিয়ে তার উদযাপনে সম্মতিই দিয়েছেন।
এরপর সেই ওভারেই আর্শদ্বীপের শিকার অ্যান্দ্রিস গাউস। খানিকটা বাউন্সি বল খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন গাউস। হার্দিক লুফে নেন সেই ক্যাচ। ভারতের খানিক মাথা ব্যথা হয়ে ওঠা নিতীশ কুমারকেও আউট করেন আর্শদ্বীপ। এছাড়া হারমীতের উইকেট নিজের করে নেন।
এই পুরো উইকেট শিকারি যাত্রায় তার খরচ হয়েছে ৯ রান। তার ছোড়া বলগুলো যেন ছিল রীতিমত অদৃশ্য এক গোলা। মার্কিন ব্যাটাররা ঠিকঠাক দেখতেই যেন পাচ্ছিলেন না। তার করা ১৭টি বলে কোন প্রকার রানই তুলতে পারেনি স্বাগতিক ব্যাটাররা।
তাতে করেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকপে ভারতের সেরা বোলিং ফিগারের মালিক এখন আর্শদ্বীপ। কেননা তিনি যে ৯ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এর আগে এই রেকর্ড দখলে ছিল কিংবদন্তিতুল্য রবিচনন্দ্রন অশ্বিনের। তিনি ১১ রান খরচায় ৪টি উইকেট বাগিয়েছিলেন।
এভাবেই সম্ভবত নিজের উপর আসা সকল বর্ণবাদী আচরণের জবাবটা দিতে হয়। এভাবেই নিজের সময়ের জন্যে অপেক্ষা করতে হয়। একটা ক্যাচ মিস করাতে যারা আর্শদ্বীপকে করেছিলেন গালমন্দ, তারা আর্শদ্বীপের এমন দিনে তাকে বাহবাও দিচ্ছে হয়ত।