আন্টিগার উইকেট যেন একটা ব্যাটিং স্বর্গ। সেখানে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত। অথচ দলে একজন বোলারের পরিবর্তে জায়গা দেওয়া হয়েছে একজন ব্যাটারকে। তাতে করে বাংলাদেশের বোলিংয়ের বৈচিত্র্যে পড়েছে ভাটা। সেই ভাটার বিপরীতে দাঁড়িয়ে তানজিম সাকিব বাইলেন বাংলাদেশের নৌকা।
ভারতের বিপক্ষে হারলেই টুর্নামেন্ট শেষ বাংলাদেশের। এই যখন সমীকরণ, তখন বাংলাদেশ চাইলো রানতাড়া করে জিততে। স্বল্প রানে ভারতীয়দের আটকে রাখার ইচ্ছে ছিল টাইগার কাপ্তান নাজমুল হোসেন শান্তর। কিন্তু শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে শুরু করে টিম ইন্ডিয়া।
রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। সেই সূচনার উপর দাঁড়িয়ে বাকি ব্যাটাররা সংগ্রহকে বাংলাদেশের ধরা-ছোয়ার বাইরে নিয়ে যেতে চাইলেন। সে কাজটায় তানজিম সাকিব যা একটু লাগাম টেনেছেন। এক ওভারে তিন বলের ব্যবধানে দুই উইকেট বাগিয়েছেন। ব্যাটিং উইকেটে বলের গতি আর বাউন্সের তারতম্য ঘটিয়ে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন।
প্রথম উইকেট হিসেবে তিনি শিকার করেন বিরাট কোহলিকে। স্লোয়ার এক অফ কাটারে উপড়ে ফেলেন বিরাটের স্ট্যাম্প। নিজের ফর্মের ফেরার বার্তাই দিচ্ছিলেন বিরাট। তাকে থামানো অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। সে কাজটাই করেছেন তানজিম সাকিব।
বিরাটের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন সুরিয়াকুমার যাদব। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই দারুণ ছন্দে রয়েছেন সুরিয়া। এসেই তানজিমের এক বাউন্সারে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা হাকান। তানজিম সাকিব একটু অপ্রস্তুত করে দিতে চাইছিলেন সুরিয়াকে। কিন্তু সে প্রয়াশ ফলপ্রসূ হয়নি।
তবে তরুণ এই বোলারকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। এর পরের বলে সুরিয়াকুমারের উইকেট নিজের ঝুলিতে নিয়ে নেন সাকিব। গতিশীল এক বলে উইকেট থেকে বাড়তি বাউন্স আদায় করে নেন তানজিম। সেই বলকে আলতো ছোঁয়ায় থার্ড ম্যান অঞ্চলে পাঠাতে চাইলেন সুরিয়া। কিন্তু বল গিয়ে জমা হয় লিটন দাসের দস্তানায়।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে তানজিম সাকিবের সেই দুই উইকেট শিকার ভারতের রানের চাকাকে একটু হলেও স্লথ করে দেয়। তাতে করে রোহিতদের সংগ্রহ ছাড়ায়নি ২০০ রানের গণ্ডি। তবে দিনটা পুরোপুরি তানজিম সাকিবের হয়েছে সেটা বলবার উপায় নেই। গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট শিকার তিনি করেছেন বটে। কিন্তু সেই সাথে রানও বিলিয়েছেন।
নিজের কোটার চার ওভার পূর্ণ করা তানজিম খরচ করেছেন ৩২ রান। ১টি চারের বিপরীতে ৩টি ছক্কা হজম করতে হয়েছে তাকে। তবুও এদিন তিনি ছিলেন বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বনিম্ন ইকোনমিকাল বোলার। বাকিরা তো রান বিলিয়েছেন মুক্তহস্তে। তাতে করে ১৯৬-তে থেমেছে ভারতের সংগ্রহ যাত্রা।