আফগান বীরত্বের ‘ভারতীয়’ অধ্যায়

প্রতিভার কমতি নেই আফগানিস্তান ক্রিকেটে। মোহাম্মদ নবী থেকে শুরু করে রশিদ খান, প্রতিভাবান ক্রিকেটের দিয়ে সমৃদ্ধ বর্তমান আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেই প্রতিভার নমুনা দেখিয়েছিল তাঁরা। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্যায়ে নিউজিল্যান্ড হারিয়ে আবারও তাঁদের প্রতিভার জানান দেয় তাঁরা। আর সুপার এইটে উঠে তো মাইটি অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিয়ে শোরগোল ফেলে দেয় আফগানিস্তান ক্রিকেট দল।

আফগানিস্তান ক্রিকেটের যাত্রা ১৯৯৫ সালে শুরু হলেও তা পরিপূর্ণ হয় ২০০৯ সালে, আইসিসি কর্তৃক ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেলে। কারণ এর আগে তাঁদের ম্যাচগুলো আন্তর্জাতিক হিসেবে স্বীকৃত ছিল না। তবে আইসিসির পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য তাঁদের টেস্ট স্ট্যাটাস পেতে হতো। যা আন্তজার্তিক প্রতিযোগিতায় তাঁদের জাতীয় দলের অসাধারণ পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করবে।

তবে আফগানিস্তানের ক্রিকেটে তাঁদের সব থেকে বড় বাধার সম্মুখীন হয় তালেবান। খেলাধুলায় তাঁদের ক্রমবর্ধমান খ্যাতির ফলে তালেবানের নেতৃত্বে পূর্ণ মাত্রার বিদ্রোহ ঢাকা পড়ে। আফগান ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি ফোর্সেস সারা দেশে তালেবানদের সাথে তীব্রভাবে সংঘর্ষ লিপ্ত হওয়ায় আফগান ক্রিকেট দলের প্রশিক্ষণের সুবিধা হারায়।

আফগান ক্রিকেটের এই দু:সময়ে ত্রাতা হয়ে আসেন বিসিসিআই। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে নয়ডার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটিকে আফগানিস্তানের অস্থায়ী হোম গ্রাউন্ড হিসাবে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এটি আফগান ক্রিকেটারদের বিকাশে আরও অবদান রাখে, কারণ তাঁরা ভারতের আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ পায়। এছাড়া ভারতের বিশ্ব মানের ক্রিকেট কোচিং সুবিধার ফলে আফগান ক্রিকেটাররা তাঁদের দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ পায়।

এসকল কিছুই ২০১৭ সালে আফগানিস্তানের টেস্ট মর্যাদা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১৯ সালে লখনৌয়ের একানা ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে আফগানিস্তানের পাকাপাকি হোম গ্রাউন্ড হিসাবে অনুমোদন দেয় বিসিসিআই। আফগান ক্রিকেট দল সেখানেই অনুশীলন করে।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে  (আইপিএল) সুযোগ পাওয়ার ফলে আফগান ক্রিকেটের উন্নতি আরও দ্রুত হতে থাকে। ২০১৭ সালে প্রথম আফগান ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে সুযোগ পান রশিদ খান। আইপিএল চলাকালীন বড় বড় ক্রিকেটেরদের সাথে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে থাকে তাঁরা। এছাড়াও লালচাঁদ রাজপুত এবং মনোজ প্রভাকারের মতো প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটাররাও তাঁদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link