নিউজিল্যান্ডের বর্জন, আমেরিকার অর্জন

এক দেশের আক্ষেপ তো আরেক দেশের অর্জন – কথাটা কোরি অ্যান্ডারসনের ক্ষেত্রে খুব খাটে। নিউজিল্যান্ডে যে ক্রিকেট প্রতিভা বিকশিত হলেও থিতু হতে পারেনি, কিন্তু ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে আমেরিকার ক্রিকেট মঞ্চে।

বেশ সম্ভাবনা জাগিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করেছিলেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার কোরি অ্যান্ডারসন। প্রতিশ্রুতির প্রতিফলনও ঘটাচ্ছিলেন তিনি। এবি ডি ভিলিয়ার্সের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক হবার আগে এই রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন কোরি অ্যান্ডারসন। অ্যান্ডারসনের এই রেকর্ড মাত্র এক বছর টিকলেও তিনি ভেঙেছিলেন শহীদ আফ্রিদির করা ১৮ বছর পুরনো এক রেকর্ড।

এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কন্ডিশনেই কোরি অ্যান্ডারসন ৪৭ বলে ২৭৮.৭২ স্ট্রাইক রেটে ১৩১ রানের ইনিংস খেলেন। এই ইনিংসে ছিলো ছয়টি চার এবং ১৪ টি ছক্কা। কিউইদের হয়ে তিনি ১৩ টেস্ট, ৪৯ ওয়ানডে আর ৩১ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছেন।

এর সুবাদে আইপিলেও তাঁর প্রচুর চাহিদা ছিল। আইপিএলে তিনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ও দিল্লী ক্যাপিটালসের মত দলের হয়ে খেলেছেন।

এমনকি নিউজিল্যান্ডের ২০১৫ বিশ্বকাপে ফাইনালে ওঠার পেছনেও তাঁর ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তবে, সেই সুদিন খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি অ্যান্ডারসনের।

ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার আগে খারাপ একটা সময়ের মধ্য দিয়ে জাচ্ছিলেন অ্যান্ডারসন। ইনজুরি যেন তাঁকে আষ্টেপৃষ্টে ধরেছিলো। এর সাথে উভয় সংকট হিসেবে উদয় হয় অফ ফর্মের।

নিউজিল্যান্ড দলে জিমি নিশাম, কলিন ডি গ্রান্ডহোমের অন্তর্ভূক্তি কোরি অ্যান্ডারসনের জায়গা অনিশ্চিত করে দিচ্ছিল; এমনকি বাদও পড়তে হয়েছে তাকে। শেষ বার কালো জার্সিতে মাঠে নেমেছেন সেও ২০১৮ এর ঘটনা।

অগ্যতা তিনি ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে বাধ্য হন। মাত্র ৩০ বছর বয়সেই তিনি নিজের ব্যাটটা তুলে রাখেন। নিউজিল্যান্ড ছেড়ে তিনি আমেরিকার ক্রিকেট বোর্ডের তিন বছরের চুক্তি গ্রহণ করেছেন। নিয়ে নেন সে দেশের নাগরিকত্বও।

২০২২ থেকে শুরু হওয়া মেজর লিগ ক্রিকেটেও খেলেন। সেখানে পারফরম করেন। চলতি বিশ্বকাপে আমেরিকার ক্রিকেটের যে উত্থান দেখা যাচ্ছে, তাঁর পেছনেও বড় অবদান এই কোরি অ্যান্ডারসনের।

এই বিশ্বকাপে অবশ্য বলার মত অবদান নেই অ্যান্ডারসনের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করলেন ২৮ বলে ২৯ রান। এক ছক্কায় সাজানো সংগ্রামী এক ইনিংস। নিজের কিউই সুদিনের ছায়া হয়ে রইলেন পুরোটা সময়। তবুও, লড়াইটা চালিয়ে গেলেন।

আনুষ্ঠানিক ভাবে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করেছে আমেরিকা। সুপার এইটে একটা ম্যাচ না জিততে পারলেও তাঁদের এই লড়াই দোলা দেবে স্মৃতির পাতায়। কোরি অ্যান্ডারসনরা হয়তো চলে যাবেন আলোচনার বাইরে, তাঁদের নাম থাকবে না খবরের পাতায়। তাই বলে তাঁদের লড়াই থেমে থাকবে না।

 

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link