এভ্রিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার। ইংরেজি এই প্রবাদের দৃষ্টান্তই স্থাপন করল আফগানিস্তান। যখনই আকাশ থেকে ঝড়েছে বারিধারা, তখনই সাইডলাইন থেকে আফগান কোচ জনাথন ট্রট ম্যাচের গতি কমাতে বললেন। সেই সিগনাল পাওয়া মাত্রই মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন গুলবাদিন নাইব।
কোনরকম পূর্ব চোট ছাড়াই, তিনি উরুর মাংসপেশিতে চেপে ধরে শুয়ে পড়লেন মাটিতে। যেন বোঝাতে চাইলেন তার মাংশপেশি লেগেছে টান। তবে এর আগে পরে তার কোন অস্বস্তি চোখে পড়েনি পুরো ম্যাচেই। এরপরই মাঠে ঢুকলেন আফগান ফিজিও। ম্যাচ থেমে গেল। বৃষ্টির কারণে মাঠ ছাড়ত হল দুই দলের খেলোয়াড়দের।
খুড়িয়ে খুড়িয়ে, সতীর্থের কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছেড়েছেন গুলবাদিন নাইব। পুরোদস্তুর একজন অভিনেতারুপেই যেন তিনি আবির্ভূত হলেন। সেই বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশি ব্যাটার লিটন কুমার দাস। তাইতো তিনি হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের সাথে হাসিঠাট্টা করলেন। খুড়িয়ে হাটার মিমিক্রিও করলেন লিটন। তিনি যেন আফগানদের পুরো পরিকল্পনাই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন।
বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ তখন ৮১ রান। উইকেট হারিয়েছে ৭টি। বৃষ্টি আইনে সে সময় ২ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। আফগানিস্তান হয়ত ভেবেছিল বৃষ্টি থামবে না। সেই ২ রানের জয় নিয়েই তারা চলে যাবে সেমিফাইনালে। যদিও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বৃষ্টি তাদেরকে হতাশ করেছে। খানিক বাদেই সরে গেছে বৃষ্টির মেঘ।
খেলা আবার গড়িয়েছে মাঠে। সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্যেই মূলত এই ফন্দি এঁটেছিল আফগানরা। কেননা ততক্ষণে বাংলাদেশের সেমিফাইনালের যাওয়ার রাস্তা হয়েছে রুদ্ধ। ক্রিকেটের তথাকথিত স্পিরিটকে যেন আফগানরা ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চাইল। তাদের কাছে ক্রিকেটটাও কোন যুদ্ধের চাইতে কম নয়।
চার বল পরেই সেই গুলবাদিন নাইব আবার ফিরেছেন মাঠে। সেই স্লিপ কর্ডোনেই ফিল্ডিং করেছেন তিনি। তার পরের ওভারে নাইব বোলিংও করেছেন। উইকেটও বাগিয়েছেন। বেজায় দৃষ্টিকটু এক দৃশ্যের মঞ্চায়ন হল বটে। তাতে করে জয়-পরাজয় ছাপিয়ে প্রশ্ন করা যেতেই পারে আফগানদের মানসিকতার।