হার্দিক পান্ডিয়ার রুপকথার বল

হেনরিক ক্লাসেনকে করা হার্দিক পান্ডিয়ার সেই বলটি হয়তো শেন ওয়ার্নের করা শতাব্দীর সেরা বলের মতো না হলেও ভারতের রুপকথার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার মতো একটি বল। ২৪ বলে যখন দক্ষিণ আফ্রিকার ২৬ রানের প্রয়োজন ছিল তখন খুব কম ভারতীয়ই হয়তো বিশ্বাস করেছিল যে ম্যাচটি ভারত জিতবে। বিশেষ করে যখন বিধ্বংসী ক্লাসেন ক্রিজে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

তবে হার্দিক পান্ডিয়ার সেই বলের সুবাদেই যেন বিশ্বকাপ নিজেদের করে নিতে পেরেছেন ভারত। ক্লাসেনকে করা সেই বলটি হাত থেকে ছোড়ার সময় সেখানে ভাল করে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে পান্ডিয়ার শিল্প। এমন পরিস্থিতিতে খুব কম বোলারই নিজের স্নায়ু ঠিক রাখতে পারে। বেশিরভাগ সময়ই বোলাররা তাদের পরিকল্পনা ভুলে যায়। তবে গত ছয় মাস দুঃস্বপ্নের মতো সময় পার করিয়েও যেন নিজের স্নায়ু ঠিক রেখেছিলেন হার্দিক।

সাধারণত পেসাররা উইকেট পাওয়ার জন্য দ্রুত এবং শর্ট বল করে থাকেন। তবে বোলারদের এই পদ্ধতিটি ব্যাটারদের জন্য অনুমেয় এবং অকার্যকর করে তোলে। ভারতীয় বোলাররা গত কয়েক দশক ধরে এই ভুলেরই পুনরাবৃত্তি করে আসছিলেন। দক্ষতা ও বড় মঞ্চে খেলার ভীতি থেকে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বোলাররা এমন ভুল করে থাকেন।

তবে হার্দিক এমন বড় মঞ্চেও নিজেকে শান্ত রেখেছিলেন। তিনি ক্লাসেনকে একটি কাটার বল করেন যা তাঁর নাগালের বাহিরে ছিল। মুম্বাইয়ে এই বলের একটি আলাদা নাম আছে। এটাকে বলা হয় ‘জেহের কা লাড্ডু’ যার বাংলা হয় বিষ দিয়ে ভরা মিষ্টি। ব্যাস এখানেই বোকা বনে যান ক্লাসেন। শরীর থেকে দূরে এই বলের গতি বুঝতে ব্যর্থ হন তিনি। ফলে ব্যাটের কানায় লেগে তা চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে।

এটি যেন ছিল ক্রিকেটর মাঠে তৈরি করা ‘কচ্ছপ ও খরগোশ’ এর উপকথা। নিজের হিটিং অ্যাবিলিটির উপর অগাধ বিশ্বাসের জন্য হার্দিকের চতুরতা বুঝতে ব্যর্থ হন ক্লাসেন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হার্দিক জানেন এখানে টিকে থাকতে হলে তাঁকে বোলিং বৈচিত্র‍্যের উপর নির্ভর করতে হবে।

টুর্নামেন্টে ভারতের অন্যতম সেরা বোলার ছিলেন ভারতীয় অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া। অধিনায়কের প্রয়োজনে বিভিন্ন ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিয়েছেন উইকেট, দলকে দিয়েছেন ব্রেক থ্রু। তবে সবকিছু পেছনে ফেলে ক্লাসেনের উইকেটটি হয়তো মনে থাকবে ভারতীয় ভক্তদের মনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link