নিজের আত্মবিশ্বাস যেন হারিয়ে ফেলেছেন শরিফুল ইসলাম। একটা ইনজুরি উড়তে থাকা শরিফুলকে নামিয়েছে মাটিতে। এখন অবশ্য পায়ের নিচের মাটি সরে যাওয়ার উপক্রম। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) ধুকছেন বা-হাতি এই পেসার। নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। বড্ড অচেনা রুপে আবির্ভূত হয়েছেন তিনি।
এখন অবধি এলপিএলে তিন ম্যাচ খেলেছেন। প্রথম দুই ম্যাচে ২টি করে ৪টি উইকেট বাগিয়েছেন বটে। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন একেবারে খালি হাতে। জাফনা কিংসের বিপক্ষে কোন উইকেট শিকার করতে পারেননি তিনি। তার থেকেও দৃষ্টিকটু বিষয় তার নামের পাশের রানের সংখ্যা।
৩ ওভারে ৪৭ রান দিয়েছেন। আরেকটু হলেই অর্ধশত রানের গণ্ডি পেরিয়ে যেত। তবে সেটা হতে দেননি ক্যান্ডি ফ্যালকন্সের অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। কারণ শরিফুলের কোটা পূর্ণ করেননি তিনি। ৩ ওভার বল করেছেন শরিফুল ইসলাম।
অবশ্য এই অবাধে রান বিলিয়ে যাওয়ার ঘটনা তিনি এলপিএলে নিয়ম করে ঘটিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম ম্যাচে শরিফুলের খরচা ৪৩ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে যদিও সংখ্যাটা কমেছিল খানিক। ৩২ রান এসেছিল তার করা ওভারগুলো থেকে। ধারাবাহিকভাবে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন, প্রতিপক্ষের জন্যে রীতিমত রানমেশিনে পরিণত হয়েছেন তিনি।
অথচ বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচেও দারুণ বোলিং করেছিলেন শরিফুল। হাতের ইনজুরিতে মাঠ ছাড়ার আগে ১টি উইকেট নিয়েছিলেন। নিজের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বল অবধি রান দিয়েছিলেন মোটে ২৬টি। এরপর পুরো বিশ্বকাপ তিনি কাটিয়েছেন ডাগআউটে বসে। একটি বারের জন্যে তাকে শুরুর একাদশে রাখেনি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।
কিন্তু বহুবারই সুযোগ তৈরি হয়েছিল বটে। তবুও নিজেকে প্রমাণের কাঙ্ক্ষিত সুযোগ পাননি। সেখানেই সম্ভবত তার আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হতে শুরু করে। নিজের সামর্থ্যকে নিজেই হয়ত প্রশ্ন করেছিলেন। কেননা এই সময়ে বাংলাদেশের পেস আক্রমণের অন্যতম সৈনিক ভাবা হয় তাকে। তবুও বিশ্বকাপে একটি ম্যাচও খেলতে না পারাটা তার জন্যে হতাশার বটে।
সেই হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় তিনি খেলছেন লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ। তাতেই পারফরমেন্সের গ্রাফটা হয়েছে নিম্নগামী। বাংলাদেশ দল সংশ্লিষ্ট কর্তা-ব্যক্তিরা নিশ্চয়ই শরিফুলের পারফরমেন্সের এমন ধ্বস অবলোকন করছেন। দ্রুতই তাদের শরিফুলের এমন দশা থেকে বেড়িয়ে আসার উপায় খুঁজতে হবে। নতুবা টাইগারদের দুশ্চিন্তার কালো মেঘকে আরও খানিকটা ঘনিভূত করবে শরিফুলের এই বাজে পারফরমেন্স।