আপনি মানুন কিংবা নাই-বা মানুন, সাকিব আল হাসানের বিকল্প খুব সহসাই আর পাচ্ছে না বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। কিন্তু তাই বলে তো তা আর নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকা যায় না। সাকিবের পরিবর্তে একজন কার্যকর অলরাউন্ডার না হোক, একজন যুতসই ব্যাটার তো প্রয়োজন হবেই। কে আসবেন সে জায়গায়?
এমন একটা প্রশ্ন করা হলে হয়ত অনেকেই তাওহীদ হৃদয়ের কথা বলবেন। তবে বর্তমান বাংলাদেশ দলে তাওহীদ হৃদয়ের দায়িত্বটা ভিন্ন। দল তার কাছ থেকে আগ্রাসী ইনিংস চায়। দল চায় তিনি ইনিংসের একেবারের শেষ অবধি খেলে আসুক। সে আস্থার প্রতিদান প্রায়শই দিচ্ছেন হৃদয়। তাইতো পাঁচ নম্বরে তিনিই আদর্শ।
তবে চার নম্বরে কে খেলবেন। সেদিক থেকে সহজ সমাধান হতে পারেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। জাতীয় দলে তিনি একটা সময় আস্থাভাজন ক্রিকেটার ছিলেন বটে। কিন্তু সময়ের সাথে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন। জাতীয় দলের রাডার থেকে অবশ্য ছিটকে যাননি। এখনও দলের পরিধির মাঝেই আছেন। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের সাথে ছিলেন তিনি।
তাইতো তিনি হতে পারেন চটজলদি সমাধান। যদিও তার ব্যাটিং ফর্ম বেশ প্রশ্নবিদ্ধ। তবে বাস্তবতা হচ্ছে তিনি কখনোই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার নন। তিনি বেশ হিসেব কষে ব্যাটিং-টা করতে জানেন। রানিং বিটুউইন দ্য উইকেটও তার বেজায় ভাল। নিজের ইনিংস খেলতে একটু বেশি সময় প্রয়োজন হয় তার। কিন্তু সময় পেলেই তিনি বড় ইনিংস খেলতে পারেন। দলকে ম্যাচ জেতাতে পারেন।
সে উদাহরণ তো তিনি ইতোমধ্যেই দিয়ে রেখেছেন। তবে আফিফকে এতদিন অবধি ব্যবহার করা হয়েছে ভিন্ন রোলে। তাকে একজন ফিনিশার বানানোর আপ্রাণ চেষ্টাই করে গেছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। সে প্রচেষ্টায় নিজেকে মানিয়ে নিতে গিয়ে ক্যারিয়ার প্রায় ফিনিশিং লাইনে পৌঁছে গেছে আফিফের ক্যারিয়ার। কিন্তু নতুব এক সূচনার দাবি জানাতেই পারেন।
যদিও সাকিবের পরিবর্তে আরেকজন ব্যাটারকে নেওয়া যেতে পারে বিবেচনায়। তিনি মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। দীর্ঘদিন ধরেই ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ। লিস্ট এ ক্রিকেটে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
১ সেঞ্চুরি ও ৭ হাফ সেঞ্চুরির কল্যাণে ৬৪৭ রান করেছিলেন তিনি। তাছাড়া লিস্ট এ ক্যারিয়ার জুড়ে পরিসংখ্যান নেহায়েত মন্দ নয় তার। ৭৭ ইনিংসে ব্যাট করেছেন ৪২.৫৫ গড়ে। ২৮৫১ রান রয়েছে তার নামের পাশে। জাতীয় দলের আশেপাশে থাকলেও, তিনি এখনও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপাননি। তবুও সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তিনি জাতীয় দলের জায়গা করে নেওয়ার দাবিদার।
অঙ্কন ও আফিফ ছাড়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের চার নম্বর ব্যাটার হওয়ার দৌড়ে তেমন কেউ নেই। শাহাদাত হোসেন দীপুর হয়ত হতে পারেন আরেকজন বিকল্প। তবে লিস্ট এ ক্যারিয়ারে খুব বেশি ম্যাচ এখন অবধি খেলেননি। কঠিন মুহূর্তে তাকে যাচাই করবার সুযোগও খুব একটা হয়নি। যদিও তিনি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট খেলেছেন।
তার টেস্ট টেম্পারমেন্ট বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে অভিজ্ঞতা আর বয়স বিবেচনায় অঙ্কন-আফিফরা এগিয়ে থাকছেন দীপুর চাইতে। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে দীপু ওপেনিং পজিশনে ব্যাট করে থাকেন, তবুও দীপুর সংযুক্তি চার নম্বর পজিশনে প্রতিযোগিতা বাড়াবে নিঃসন্দেহে। তাতে করে খেলোয়াড়দের ভাল করবার স্পৃহা বাড়বে। নিজেদের মান বাড়ানো তাড়না বাড়বে। সেটা বাংলাদেশের ক্রিকেটে জন্যে হতে পারে মঙ্গলময়।