এক গোলে ২০০১ সালের পর ফাইনালে কলম্বিয়া

একটা গোল। একটা গোলে লেখা হয় স্বপ্ন। একটা গোল দেয় পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর অনুভূতি। ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা খুলে দেয় সেই একটি গোল। সেই এক গোলের কল্যাণে ২৩ বছর বাদে ফাইনালের টিকিট কাটল কলম্বিয়া। উড়তে থাকা উরুগুয়ের স্বপ্ন হল ধূলিসাৎ।

কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের সেমিফাইনাল। সবাই হয়ত উরুগুয়ের পক্ষেই ধরেছিল বাজি। কেননা দলটা যে কোয়ার্টার ফাইনাল ছাড়া ৯ খানা গোল দিয়েছিল প্রতিপক্ষের জালে। কলম্বিয়া যে ছেড়ে কথা বলবে না, তার প্রমাণ তো তারা রেখেছিলেন গ্রুপ পর্বের ব্রাজিলের বিপক্ষে।

প্রথমার্ধেই গোলের দেখা পেয়ে যায় কলম্বিয়া। শুরু থেকেই উরুগুয়ের উপর চাপ বাড়িয়েছে হামেস রদ্রিগেজরা। উরুগুয়ে ঠিকঠাক আক্রমণ সাজানোর সুযোগ পেয়েছে খুব সামান্যই। যদিও সেসব ভয় ধরাতে পারেনি কলম্বিয়ার ডিফেন্স লাইনে। তবে কলম্বিয়ার এক একটি আক্রমণে উরুগুয়ে কেপে উঠেছে। শেষ অবধি গোল হজমও করেছে।

ম্যাচের ৩৯ মিনিটের মাথায় হামেস রদ্রিগেজ ক্রস বাড়িয়ে দেন উরুগুয়ের ডি বক্সে। ছয় গজ বক্সের বাম পাশ থেকে হেড করেন জেফারসন লেরমা। গোলবারের নিচের অংশ দিয়ে বল জড়িয়ে যায় জালে। উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙা উল্লাস ছড়িয়ে যায় সর্বত্র।

কিন্তু ম্যাচে যে তখনও অনেক ঘটনা ঘটা বাকি। স্বাভাবিকভাবেই কোপা আমেরিকার ম্যাচে পেশিশক্তির লড়াইটা হয় বেশি। তাছাড়া দুই সমশক্তির দলের মাঝে বল দখলের লড়াইটা পরিণত হয় শারীরিক লড়াইয়ে। এদিনের ম্যাচেও হয়েছে তাই। ২৪টি ফাউল হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে। যার একটি পরিণত হয় লাল কার্ডে। বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে লাগ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল মুনোজ।

দ্বিতীয়ার্ধে কলম্বিয়ার মূল চ্যালেঞ্জ ছিল উরুগুয়েকে রুখে দেওয়া। সেটাই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ্য। দারুণভাবে সফলও হয়েছে দশ জনের দলটি। উরুগুয়ের কোন আক্রমণই ফলপ্রসূ হয়নি শেষ অবধি। এক লুইজ ডিয়াজ বেশ কিছু সময় ব্যয় করেছেন উরুগুয়ের রক্ষণে।

তবে ফেদে ভালভার্দেরা আক্রমণ করে গেছে একের পর এক। এক মুহূর্তের জন্যে কলম্বিয়ার রক্ষণকে স্বস্তি দেয়নি। এমনকি বদলি খেলোয়াড় লুইজ সুয়ারেজ প্রায় গোল করেই বসেছিলেন। বেরসিক গোলবার আটকে দেয় সুয়ারেজের শট। কলম্বিয়ার জটলার মাঝে খুব বেশি শট চালানোর সুযোগও পায়নি উরুগুয়ে।

অগ্যতা সেই ১-০ গোলের ব্যবধান নিয়েই জয়ের হাসি হেসেছে কলম্বিয়া। কেঁদেছেন হামেস রদ্রিগেজ। তার কাছে এই ফাইনাল কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা অবশ্য বলে দেওয়া যায় তার চোখের জল দেখে। হামেসরা পেরেছেন। ২৩ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন। ২০০১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এবারও কলম্বিয়া কি লিখবে এমন কোন রুপকথা?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link