শিরোপা জেতার পর উদযাপন কোন নিয়ম মানে না, কোন শৃঙ্খল মানে। কবি নজরুলের সুরে বলে উঠতে ইচ্ছে করে ‘আমি মানি না কো কোন আইন’। তবু কোপা আমেরিকা জয়ের পর এঞ্জো ফার্নান্দেজ যা করেছেন সেটা কোন যুক্তিতেই গ্রহণযোগ্য হয় না, বর্ণবাদের মত ক্ষমার অযোগ্য পাপ করেছেন তিনি।
অবশ্য কেবল তাঁকে নয়, কাঠগড়ায় তুলতে হয় পুরো আর্জেন্টিনা দলকে। এই মিডফিল্ডারের ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রফি জেতার পর টিম বাসে ফ্রান্সকে নিয়ে একটি বর্ণবাদী গান আর্জেন্টিনা দলের সবাই মিলে গাইছে।
সেই গানের ভাষা ও অর্থ এককথায় বাজে। সেখানে ফরাসিদের উদ্দেশ্যে বলা হয় তাঁদের বাবা ক্যামেরুনিয়ান এবং মা নাইজেরিয়ান কিন্তু তাঁরা ফরাসি। এছাড়া কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে ট্রান্সজেন্ডার জড়িয়ে বিশ্রী গালিও দেয়া হয়। প্রায় ৫০ সেকেন্ডের এই ভিডিও চিত্রে এসবই জোর গলায় গেয়েছিলেন আলবিসেলেস্তারা।
মুহূর্তের মাঝে নেট দুনিয়ায় এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, স্বাভাবিকভাবেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন এঞ্জো। দ্রুত ভিডিও ডিলিট করে ক্ষমাও চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। সাবেক ফরাসি অধিনায়ক হুগো লরিস কড়া ভাষায় অভিযোগ করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে; ক্লাব সতীর্থ ওয়েসলে ফোফানা তো ভিডিও নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন ‘ফুটবল ২০২৪: লুকোচুরিহীন বর্ণবাদ’।
এরপরই নড়েচড়ে বসে চেলসি; আনুষ্ঠানিক তদন্তের ঘোষণা দেয় তাঁরা। যদিও আর্জেন্টাইন তারকা নিজের ভুল বুঝতে পারেন, ফোফানা সহ সব সতীর্থের কাছে নি:শর্তে ক্ষমা চান। একই সাথে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবদান রাখার অঙ্গীকার করেন তিনি।
অনেক চেষ্টার পর শেষমেশ ড্রেসিংরুমের মন গলাতে পেরেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার, ফলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়া ছাড়াই তদন্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে সাধারণ ফুটবলপ্রেমীরা এখন বাঁকা চোখে দেখছে তাঁকে।
অবশ্য আর্জেন্টিনা দলের পক্ষ থেকে এখনো কোন বার্তা দেয়া হয়নি এই ব্যাপারে। যদিও আর্জেন্টিনার ক্রীড়া সচিব জুলিও গ্যারো অধিনায়ক লিওনেল মেসি এবং ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ক্লদিও ট্যাপিয়াকে ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু তাঁরা দু’জনের কেউই ক্ষমা চাননি বরং গ্যারোকেই বহিষ্কার করেছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি জ্যাভিয়ের মায়লো।