সেই কবেকার কথা। এরপর কেটে গেছে প্রায় ১১২ বছর। এই দীর্ঘ সময়ে কেউ একজন বসতে পারেননি জিমি ম্যাথুয়েজের পাশে। অজি এই ক্রিকেটার সেই ১৯১২ সালে গড়েছিলেন এক রেকর্ড। যা এখনও রয়েছে অক্ষত। সেই রেকর্ড দিয়েই যেন তিনি হয়ে গেছেন অমর।
এর আগে বরং জিমি ম্যাথুয়েজের পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন। তিনি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার। খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তার। মাত্র ৮টি টেস্ট ম্যাচেই সীমিত থেকেছে তার ক্যারিয়ার। কিন্তু এই স্বল্প সময়ের মাঝে বিরল এক রেকর্ড গড়ে গেছেন তিনি। একই টেস্টে দুইটি হ্যাট্রিক করবার রেকর্ড গড়েছিলেন জিমি। সেই রেকর্ডে এখন অবধি ভাগ বসাতে পারেননি কেউই।
১৯১২ সালে আয়োজিত হয়েছিল ত্রিদেশীয় সিরিজ। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও সেই সিরিজে অংশ নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সবগুলো ম্যাচ আয়োজিত হয়েছিল ইংল্যান্ডের মাটিতেই। ম্যানচেস্টারে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়া।
তিন দিনের সে টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিনই অস্ট্রেলিয়া বেশ বড়সড় লিড নিয়ে নেয়। পাঁচ ঘন্টা ব্যাটিং করে ৪৪৮ রান জড়ো করে নিজেদের খাতায়। দ্বিতীয় দিনটা একপেশেই ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের তোপের মুখে দাঁড়াবার উপায় জানা ছিল না প্রোটিয়াদের। তবুও বেশ কষ্টে তারা ফলো-অন এড়ানোর দিকে রাখছিল চোখ।
এরপরই ধ্বংসযজ্ঞের রুপকার হিসেবে হাজির হন জিমি ম্যাথুয়েজ। এসেই অষ্টম উইকেট জুটিতে আঘাত করেন। প্রোটিয়া ব্যাটার রোলান্ড বেউমন্টের উইকেট উপড়ে ফেলেন জিমি। এরপরের দুই উইকেট নেন লেগ বিফোরের ফাঁদ ফেলে। তাতেই পরিসমাপ্তি ঘটে প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংসের।
এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ফলো-অনে পড়ে আবার ব্যাটিংয়ে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটিং ধস আরও খানিকটা তীব্র হয় প্রোটিয়াদের। ৭০ রানের মাথায় ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এরপর আবারও বোলিং প্রান্তে নিয়ে আসা হয় লেগব্রেক বোলার জিমি ম্যাথুয়েজকে। বল হাতে তিনি রচনা করেন বিরল সেই রেকর্ড। পর পর তিনটি উইকেট তিনি তুলে নেন।
প্রথমে বোল্ড আউট, এরপর নিজের বলে নিজেই ক্যাচ লুফ নেন। শেষটাও তালুবন্দী হয় সতীর্থের। ব্যাস! বিরল সেই রেকর্ডের সূচনা আর এক প্রকার সমাপ্তি ঘটে সেখানেই। এরপর কত ধুরন্ধর বোলাররা শাসন করেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ময়দান। কিন্তু কেউ কখনও এক টেস্টে দুই হ্যাট্রিকের মালিক হতে পারেননি।