নিজেকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে যেখানে কোটি কোটি ডলারও নস্যি। এই ব্রত নিয়েই হয়ত ফুটবলের সবুজ প্রাঙ্গনে পা রেখেছিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তিনি হয়ত কখনো চিন্তাও করেননি যে তার বাজারমূল্য ঐ নীলাম্বর ছুঁয়ে দেখবে। তবে কল্পনা সত্যি হয়েছে, স্বপ্ন হয়েছে বাস্তবতা।
রিয়াল মাদ্রিদের তারকা খেলোয়াড় ভিনিসিয়াসকে সৌদিতে নিয়ে আসতে চায় সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ)। ২০৩৪ সালে সৌদিতে আয়োজিত হবে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’। ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়োজনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সৌদি আরব।
সেই ধারাবাহিকতায় তারকা ফুটবলারদের সৌদি প্রো লিগের সাথে সম্পৃক্ত করার প্রক্রিয়া আরও আগে থেকেই করছে দেশটি। যদিও বুড়িয়ে যাওয়া তারকাদের ইতোমধ্যেই সৌদি লিগের সাথে যুক্ত করতে পেরেছে পিআইএফ। সৌদি সরকারের অধীনস্থ এই সংস্থাটি দেশটির বড় চার ক্লাবের ৭৫ শতাংশ মালিকানা নিজদের কব্জায় রেখেছে।
আল আহলি, আল ইত্তিহাদ, আল হিলাল ও আল নাসের- এই চার ক্লাবের মালিকানার সিংহভাগই সৌদি সরকারের অধীনস্থ। তারকা খেলোয়াড়দের এই ক্লাবগুলোতে ভিড়িয়ে সৌদি আরবের ফুটবল সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার বাড়ানোর পরিকল্পনা। এবার তাই তরুণ তারকার দিকে নজর দিয়েছে পিআইএফ।
সেই ধারাবাহিকতায় ভিনিসিয়াস জুনিয়রের জন্যে বেশ লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যেই। ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো প্রস্তাব করা হয়েছে রিয়ালের জন্য। তাছাড়া বাৎসরিক ২০০ মিলিয়ন ইউরো বেতন তার নির্ধারিত। সাথে থাকছে বোনাস। এই প্রস্তাবে রাজি হলে পাঁচ বছরে ভিনিসিয়াস আয় করতে পারতেন নিদেনপক্ষে এক বিলিয়ন ইউরো। বিশাল অংকের এই অর্থ যে কারো চোখ ছানাবড়া করে তুলতে পারে।
ভিনিসিয়াসও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু সে এ বিষয়টি ঠেলে দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের কোর্টে। রিয়াল অবশ্য ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোতে কোন আগ্রহ প্রকাশ করেনি। এমনও শোনা যায়, রিয়াল এই আলোচনায় বরাবরই সামনে এনেছে ভিনিসিয়াসের এক বিলিয়ন ইউরো বাইআউট ক্লজ।
রিয়াল মাদ্রিদের সাথে ২০২৭ সাল অবধি চুক্তি রয়েছে ভিনিসিয়াসের। তাছাড়া লস ব্ল্যাঙ্কোসদের পরিকল্পনার অন্যতম অস্ত্র এখন ভিনিসিয়াস। তাকে এই মুহূর্তে ছাড়তে নারাজ মাদ্রিদ বোর্ড। সে কারণেই তার নামের পাশে জুড়ে দেয়া হয়েছে এক হাজার কোটি ইউরোর বিক্রয় মূল্য।
নিশ্চয়ই এত বিপুল পরিমাণ অর্থ একজন খেলোয়াড়ের পেছনে ব্যয় করতে চাইবে না সৌদি সরকার। মূলত ভিনিসিয়াসের প্রতি নিরুৎসাহিত করতেই এমন বিশাল অংক জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ভিনিসিয়াসও এখনই ইউরোপ ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চাইবেন না নিশ্চয়ই। কেননা এই মুহূর্তে যে তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।
গেল মৌসুমে তার কল্যাণেই স্প্যানিশ লা লিগা ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল মাদ্রিদ। এবারও হয়ত সে পরিকল্পনায় আছে ক্লাবটি। তাইতো প্রায় এক বিলিয়ন ইউরো আয়ের দিকে পা বাড়াচ্ছেন না ভিনিসিয়াস জুনিয়র। অর্থই যে শেষ কথা নয়, তেমন উদাহরণ তো রয়েছে ভুরিভুরি।