গামিনি ডি সিলভা, বাংলাদেশ ক্রিকেটের খোঁজ রাখা প্রত্যেকেই হয়ত এই নামটার সাথে বড্ড বেশি পরিচিত। দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে শ্রীলঙ্কার এই পিচ কিউরেটরের উপর। এমনকি মাঠ কর্মীদের প্রাপ্য বোনাসের অর্থও কুক্ষিগত করার অভিযোগ উঠেছে।
জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনের পরই তিনি রীতিমত গা ঢাকা দিয়েছিলেন। চলে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কায়। এরপর মঙ্গলবার তাকে দেখা গেছে মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে। এসে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটগুলোও পর্যবেক্ষণ করেছেন গামিনি। এরপর মাঠকর্মীদের সাথেও কথা বলতে দেখা গেছে তাকে।
সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নানামুখী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ঘরবাড়ি মিরপুর স্টেডিয়ামের দেখভাল করছেন। তার একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেন তিনি গোটা ক্রিকেট মহলে। কোন এক অদৃশ্য ক্ষমতাবলে নিজেকে অবিচ্ছেদ্য অংশ বানিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে মাঠকর্মীরা। তিনি তাদের প্রাপ্য অর্থ বুঝিয়ে দেন না। মাঠ কর্মীদের অনেকেই বেশ ভাল পরিমাণ অর্থ এখনও তার কাছ থেকে পান। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের দেওয়া উপহারের অর্থ জমা হয় গামিনির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। সেই অর্থের সুষমও বণ্টনও হয় না।
তাছাড়া সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কিউরেটরের দায়িত্ব পালন করা টনি হেমিংও অভিযোগ তুলেছিলেন গামিনির বিরুদ্ধে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে সিলেটের আউটফিল্ডকে খেলার উপযোগী করে তুলেছিলেন টনি হেমিং। প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পর।
কিন্তু তিনি বেশিদিন স্থায়ী হতে পারেননি বাংলাদেশে। যাওয়ার পর ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ‘শ্রীলঙ্কা মাফিয়া’ সম্পর্কে বলেন। সেখানে মূলত তিনি গামিনি ডি সিলভার দিকেই আঙ্গুল তুলেছিলেন। বোর্ডের অন্দরমহলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা গামিনি অন্য কিউরেটরদের কাজের ক্ষেত্রকে সংকীর্ণ করে দিতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এতসব অভিযোগ নিয়েও তিনি ফিরেছেন মিরপুরে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে এসেছে পরিবর্তন। ধারণা করা যাচ্ছে যে, গামিনি হতে পারেন চাকরীচ্যুত। শেষ বেলায় তিনি হুট করেই আবার ছাড়তে পারেন দেশ। তাই তো পাওনা অর্থের জন্য মাঠকর্মীরা তাকে অবরুদ্ধ করতে পারেন জানিয়েছে বিশ্বস্ত সূত্র।
গামিনির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সুরাহা দ্রুততার সাথেই করা প্রয়োজন। তাছাড়া তার বিকল্পও খোঁজা শুরু করা প্রয়োজন। অন্তত ধানক্ষেতের তকমা থেকে মিরপুরকে মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন। আর কতকাল তিরস্কার সহ্য করবে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম?