ভারতের বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা ৮১ রান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলার শুরুতেই সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বনে গিয়েছিলেন নাঈম শেখ। ভারতের তুখোড় সব ব্যাটারদেরকে পেছনে ফেলে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সর্বাধিক রান সংগ্রহ করেছিলেন। তখনই হয়ত নাঈমকে নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিল অনেকে।
কিন্তু প্রত্যাশা পূরণে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন দারুণভাবে। সেই নাঈমকে আবার দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পে। আবারও ভারত সিরিজ, আবারও নাঈম শেখ। ক্যারিয়ারের শুরুতেই ভারতের বিপক্ষে তার পারফরমেন্সই কোন না কোনভাবে বাংলাদেশের নির্বাচক প্যানেলকে আরও একবার প্রভাবিত করেছে।
নাঈম শেখ তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। ঘরের মাঠে নয়। ভারতের মাটিতে অভিষেক হয় নাঈমের। ৩ ম্যাচের সেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাংলাদেশ হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। কিন্তু সিরিজে ১৪৩ রান নিয়ে নাঈম নজর কেড়েছিলেন। ৪৭.৬৬ গড়ে রান তুলে তিনি রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন।
ওপেনিংয়ে নেমে ১৩৩ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে নাঈম সেবার রান তুলেছিলেন। বাংলাদেশ বিবেচনায় তার সেই পারফরমেন্স চমকপ্রদ ছিল বটে। কিন্তু নিজের দারুণ শুরুটাকে দীর্ঘায়িত করতে পারেননি তিনি। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া ক্যারিয়ারটা ইতোমধ্যেই বেশ চড়াই-উৎরাই পার করছে। যার মূল কারণ তার টেকনিক্যাল দূর্বলতা।
বাঁ-হাতি এই ব্যাটারের পা খুব একটা নড়ে না। ক্রিজের ভেতর ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে তিনি রান নেওয়ার চেষ্টা করেন। তাতে করে তার বিপক্ষে বোলারদের পরিকল্পনা করা সহজ হয়ে যায়। এছাড়াও মানসিকভাবে চাপ সামলে নিতেও বেগ পেতে দেখা যায় তাকে। চাপের মুহূর্তে মাত্রাতিরিক্ত ডট বল খেলার বিষাক্ত প্রবণতা রয়েছে তার। ধারাবাহিকভাবে রান করতে না পারা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের নিত্যদিনের দূর্বলতা। নাঈম শেখ তার ব্যতিক্রম নন।
তবুও নাঈম ফিরেছেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে। ফিটনেস ঠিক রাখতে মাঠে দৌড়াচ্ছেন, আবার নিজের ব্যাটার সত্ত্বাকে চাঙ্গা রাখতে নেট অনুশীলনও করছেন। ভারতের বিপক্ষে তার খেলা সেই সিরিজটি হয়ত এদফা প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। তাছাড়া তাকে এই মুহূর্তে জাতীয় দলের ক্যাম্পে যুক্ত করবার বিশেষ কোন কারণ নেই।
কেননা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ এ দলের হয়ে পারফর্ম করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। যদিও কেউ কেউ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে তার পারফরমেন্সকে প্রভাবক ধরতে পারে। তবে একটু মানসম্মত বোলিং আক্রমণের সামনে নাঈম বরাবরই ধুঁকেছেন। ডিপিএলের মান নিয়ে তো প্রতিনিয়তই উঠছে প্রশ্ন।
এখন দেখবার পালা আবারও জাতীয় দলে সুযোগ এলে ভারতের বিপক্ষে নাঈম পারফর্ম করতে পারেন কি-না। নাকি তার গুরু খালেদ মাহমুদ সুজনের আক্ষেপকে আরও দীর্ঘায়িত করবেন। কেননা সুজন তো গেল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও নাঈমকে নিয়ে আফসোস করেছেন। নাঈম নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে নিজেই যে অবগত নন।