আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে এমার্জিং দলের সিরিজটায় আসলেই জয় জয়াকার। কেবল দলের জয়ের অর্থেই নয়; খেলোয়াড় মাহমুদুল হাসান জয়েও রঙিন এই সিরিজ
বাংলাদেশ সফরে এসে যেন পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরই হতে পারছে না আয়ারল্যান্ড উলভস। এক মাত্র চার দিনের ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারের পর পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও পরের চার ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের সাথে হোয়াটওয়াশ হয়েছে আইরিশরা।
আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়াতে শেষ ম্যাচে সাত পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমে মাহমুদুল হাসান জয়ের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে আয়ারল্যান্ড উলভসকে ২৬০ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় বাংলাদেশের যুবারা। ২৬১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেলেও ৬ রানে হেরে যায় আইরিশরা।
তবে এক পর্যায়ে সহজ জয়ের পথেই ছিলো সফরকারীরা। দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯৭ রান যোগ করে জয়ের পথে ছুটতে থাকে আইরিশরা। কিন্তু দারুণ খেলতে থাকা মার্ক অ্যাডায়ারকে (৪৫) প্যাভিলিয়নের পথ ধরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন অধিনায়ক সাইফ হাসান।
এই জুটি ভাঙ্গার পরই পথ হারায় আয়ারল্যান্ড উলভসের ইনিংস। দলীয় ১১৪ রানে হ্যারি ট্যাক্টর (৬) ফিরে যাওয়ার পরই সাইফ হাসানের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে ১২ রান করে আউট হয়ে যান গেটকেট। এই দুজন ফিরে যাওয়ার পরই বাংলাদেশের পথের কাটা হয়ে থাকা ডোহানিকে ফিরিয়ে দিয়ে আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দেন শামীম হোসেন।
৯৯ বলে ৮১ রান করে ডোহানি আউট হয়ে গেলে শেষের দিকে নিল নক লড়াই চালিয়ে গেলেও শেষ ওভারের সমীকরণ মেলাতে না পেরে ৬ রানে হেরে যায় আয়ারল্যান্ড উলভস। বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের পক্ষে সাইফ হাসান ৩ টি, শফিকুল ইসলাম ও তানভির ইসলাম ২ টি এবং রেজাউর রহমান এবং শামীম হোসেন ১ টি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম চার ম্যাচে ইনিংস উদ্বোধন করা তানজিদ হাসান তামিমকে শেষ ম্যাচে বিশ্রাম দিয়ে সাইফ হাসানের সাথে ইনিংস উদ্বোধন করতে পাঠানো হয় আনিসুল হক ইমনকে। তবে তৃতীয় ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সাইফ হাসানকে এদিন শুরুতেই ফিরিয়ে দেন মার্ক অ্যাডায়ার।
দলীয় ১৫ রানে সাইফ হাসান (৩) ফিরে যাওয়ার পর ইমনকে সাথে নিয়ে দলের হাল ধরেন মাহমুদুল হাসান জয়। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ৪৯ রান। কিন্তু দারুণ খেলতে ইমন ৪১ রান করে আউট হয়ে গেলে ভাঙ্গে এই জুটি। ইমন বিদায় নেওয়ার পর উইকেটে এসে বেশীক্ষণ থাকতে পারেননি তৌহিদ হৃদয় (২০), শাহাদাত হোসেন (১৩) ও শামীম হোসেন (১১)।
১৬৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও ভরষা হয়ে উইকেটে ছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। ৬ষ্ঠ উইকেটে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে সাথে নিয়ে ৭১ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার পথে সিরিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদুল হাসান জয়।
অঙ্কন ৩৯ বলে ৩৩ রান করে আউট হয়ে গেলে ইনিংসের ৪৯তম ওভারে রান আউটের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান মাহমুদুল হাসান জয়ও। আউট হওয়ার আগে ৯ টি চার ও ৩ টি ছয়ের সাহায্যে ১৩৫ বলে ১২৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন জয়। জয়ের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত ২৬০ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ড উলভসের পক্ষে মার্ক অ্যাডায়ার ৩ টি, রুহান প্রিটোরিয়াস ও হ্যারি ট্যাক্টর ২ টি এবং পিটার চেজ ও ডিলানি ১ টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ইমার্জিং দল: ২৬০/১০ (ওভার: ৪৯.৪; সাইফ- ৩, আনিসুল- ৪১, মাহমুদুল- ১২৩, হৃদয়- ২০, শাহাদাত- ১৩, শামীম- ১১, অঙ্কন- ৩৩, বিপ্লব- ৩, রেজাউর- ৪*, শফিকুল- ১, তানভীর- ০) (চেজ- ৭-১-৪৪-১, অ্যাডায়ার- ৫.৪-১-২৭-৩, ডেলানি- ১০-০-৬৩-১, প্রিটোরিয়াস- ১০-০-৫১-২, টেক্টর- ১০-০-৩৭-২)
আয়ারল্যান্ড উলভস: ২৫৫/৯ (ওভার: ৫০; ল’লর- ০, ডোহানি- ৮১, অ্যাডায়ার- ৪৫, টেক্টর- ৬, গেটকেট- ১২, টাকার- ১৭, রক- ৩৫, ডেলানি- ৭, প্রিটোরিয়াস- ১০, হোয়াইট- ৬*, চেজ- ১০*) (রেজাউর- ৬-০-২২-১, শফিকুল- ৭-০-৫৭-২, তানভীর- ১০-০-৩৯-২, সাইফ- ১০-১-৩১-৩, শামীম- ৭-০-৩৮-১)
ফলাফলঃ বাংলাদেশ ইমার্জিং দল ৬ রানে জয়ী ও ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ী।