প্রত্যেক ক্রিকেটারই চায় বিশ্বের সকল মাঠে ভালো পারফর্ম করতে। যেকোনো ক্রিকেটার সে বোলার কিংবা ব্যাটসম্যান যেই হোক না কেন তিনি সবসময়ই ঘরের মাঠে ভালো খেলতে পারবেন সেটা স্বাভাবিক। কারণ তাঁর ক্রিকেটের শুরুটাই হয় নিজের পরিচিত পরিবেশে।
নিজেদের পরিচিত পরিবেশের বাইরেও এমন কিছু ক্রিকেটারকে দেখা যায়, যারা নির্দিষ্ট কিছু মাঠে ভালো খেলেন। সেটা হতে পারে দেশের কোনো মাঠ কিংবা অন্য কোনো মাঠে। সেটা বোলার বা ব্যাটসম্যান যে কেউ হতে পারে। এটার কারণ হতে পারে ওই মাঠের পরিবেশের সাথে ঐ ক্রিকেটার সহজেই মানিয়ে নিতে পারে।
ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলে একটি নির্দিষ্ট মাঠে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন এমন পাঁচ জন বোলারের তালিকা নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
- সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন, ঢাকার শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই মাঠে সাকিব খেলেছেন ১১৮ ম্যাচ। এই ১১৮ ম্যাচে তিনি শিকার করেছেন ২০৭ উইকেট। এই মাঠে সাকিবের সেরা বোলিং ৫৯ রানে ৬ উইকেট। একটি নির্দিষ্ট মাঠে এখন পর্যন্ত সাকিব ব্যতীত কোনো বোলার ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেনি।
এই মাঠে সাকিবের বোলিং গড় ২৫.৫৭। এখন পর্যন্ত এই মাঠে একটি উইকেট শিকার করার জন্য বল করেছেন প্রায় ৪২ টি (৪১.৬)। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সাকিবের ইকোনমি রেট ৩.৬৮। এছাড়াও এই মাঠে ৯ বার পাঁচ উইকেট এবং ১ বার ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
- মুত্তিয়া মুরালিধরন (শ্রীলঙ্কা)
মুত্তিয়া মুরালিধরন টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। তিনি টেস্ট ক্রিকেটে শিকার করেছেন ৮০০ উইকেট। তিনি কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছেন। এই মাঠে তিনি নিয়েছেন ১৮৮ উইকেট। অন্য কোনো মাঠে তিনি এর থেকে বেশি উইকেট শিকার করেননি তিনি। সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তিন সংস্করণ মিলিয়ে তিনি খেলেছেন ৪৬ ম্যাচ।
এই মাঠের তাঁর সেরা বোলিং ৮৭ রানে ৮ উইকেট। সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তাঁর বোলিং গড় ২২.২৩ এবং স্ট্রাইক রেট ৫৩.১। এছাড়াও এই মাঠে মুরালিধরণ ১৪ বার পাঁচ উইকেট এবং ৪ বার ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করেছেন। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবে মাঠে মুরালিধরনের ইকোনমি রেট ২.৫১।
- ওয়াকার ইউনুস (পাকিস্তান)
শীর্ষে থাকা দুই বোলারের মত ওয়াকার ইউনুস নিজের দেশের কোনো স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ উইকেট পাননি। তিনি মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন।
ক্রিকেটের দুই সংস্করণ মিলে শারজাহতে ৬৫ ম্যাচ খেলেছেন ওয়াকার ইউনুস। ৬৫ ম্যাচে শিকার করেছেন ১২৬ উইকেট। এই মাঠে তাঁর সেরা বোলিং ২৬ রানে ৬ উইকেট।
শারজাহতে ওয়াকার ইউনুসের বোলিং গড় ২০.৪৪ এবং ইকোনমি রেট ৪.৪৩। এছাড়াও প্রতি উইকেটে জন্য বল করেছেন প্রায় ২৮ (২৭.৬) টি। এই মাঠে পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন ৪ বার।
- হিথ স্ট্রিক (জিম্বাবুয়ে)
জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের সেরা পেসার ছিলেন হিথ স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ানডে এবং টেস্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার হিথ স্ট্রিক।
তিনি ক্রিকেটের দুই সংস্করণে খেলেছেন হারারে স্পোর্টিং ক্লাব মাঠে। এই মাঠে ৪৯ ম্যাচ খেলে তিনি শিকার করেছেন ১২৬ উইকেট। এই মাঠের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার হলেন হিথ স্ট্রিক। এই মাঠে তার সেরা বোলিং ৭৩ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট। হারারে স্পোর্টিং ক্লাব মাঠে তাঁর বোলিং গড় ২৩.৮৩ এবং বোলিং স্ট্রাইক রেট ৪৭.৯। হারারেতে তাঁর বোলিং গড় ২.৯৮। এছাড়াও এই মাঠে তিনি তিন বার পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন।
- জেমস অ্যান্ডারসন (ইংল্যান্ড)
জেমস অ্যান্ডারসন ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সেরা টেস্ট পেসার। পেসার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন জেমস অ্যান্ডারসন।
তিনি সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছেন ক্রিকেট মক্কা খ্যাত লর্ডসে।অ্যান্ডারসন লর্ডসে খেলেছেন ৪১ ম্যাচ। এই সময়ে তিনি শিকার করেছেন ১২৫ উইকেট। লর্ডসে তাঁর সেরা বোলিং ৪২ রানে ৭ উইকেট। লর্ডসে অ্যান্ডারসন ৬ বার পাঁচ উইকেট শিকার করেছেন। এই মাঠে তাঁর বোলিং গড় ২৬.২৬ এবং বোলিং স্ট্রাইক রেট ৫০.৭। এছাড়াও এই মাঠে তাঁর ইকোনমি ৩.১০।