চেতন চৌহান ভারতীয় ক্রিকেটার ছিলেন। এই ভদ্রলোকের বিখ্যাত হবার অনেক কারণ ছিল।
ভদ্রলোক সুনীল গাভাস্কারের সবচেয়ে বিখ্যাত ওপেনিং পার্টনার ছিলেন। অবসরের পর ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি)তে যোগ দিয়ে উত্তরপ্রদেশ থেকে দুইবার লোকসভা সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সুনীল গাভাস্কারের সময়ে ভারতের জার্সিতে ৪০ টেস্ট খেলে ১৬ হাফ সেঞ্চুরিতে ২০০০ এর উপরে রান করেছিলেন।
গাভাস্কারের সাথে চৌহানের ওপেনিং জুটিকে সেই সময়ের তো বটেই সর্বকালের অন্যতম সেরা টেস্ট ওপেনিং জুটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দু’জনে জুটি বেঁধে ৫৩.৭৫ গড়ে ৩০০০ এর উপরে রান সংগ্রহ করেছেন যার ১০ টি ছিল শতরান ছাড়ানো জুটি।
তবে ভদ্রলোকের নাম এসব কারণে যত না আলোচিত হয় তারচেয়েও বেশি আলোচিত হয় কোন সেঞ্চুরি করতে না পারার কারণে। টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি ছাড়াই সবচেয়ে বেশি রানের মালিক ছিলেন এক সময়। পরে চৌহানের কাছ থেকে সে অনাকাঙ্খিত রেকর্ডটি কেড়ে নেন শেন ওয়ার্ন। রেকর্ড হারিয়ে চৌহানের কষ্ট অনুভব করার চেয়ে আনন্দিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ছিল।
চেতন চৌহানের সেঞ্চুরি না পাওয়া নিয়ে এত বেশি চর্চা হয়েছে যে এক সময় তিনি ‘মিস্টার ফিফটি’ তকমা পেয়ে যান। একদা টেস্টে আমাদের আশা আকাঙ্খার প্রতীক হাবিবুল বাশারকে সুমনও মিস্টার ফিফটি নামে ডাকা হত। তবে হাবিবুল ঠিকই তিন সেঞ্চুরি করে চৌহানের দল থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।
গত বছরের ১৬ আগস্ট চেতন চৌহান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইহলোক ত্যাগ করার মোটামুটি অনেক আগেই নিরোশান ডিকওয়েলার টেস্ট অভিষেক হয়ে গেছে। চৌহান থেমেছিলেন ৪০ টেস্টে ১৬ হাফ সেঞ্চুরি নিয়ে। নিরোশান ডিকওয়েলা এর মধ্যে ৪৫ টেস্ট খেলে ফেলেছেন।
এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল ১৮ হাফ সেঞ্চুরি নিয়ে ইতোমধ্যেই চৌহানকে ছাড়িয়ে সেঞ্চুরি ছাড়া সবচেয়ে বেশি হাফ সেঞ্চুরি করে মিস্টার ফিফটি উপাধি পাওয়ার ক্ষেত্রে চৌহানের চেয়েও বড় দাবিদার বনে গেছেন। চৌহানের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৯৭ রানের, ডিকওয়েলাও মোটামুটি চৌহানকে অনুসরণ করেই যেন সর্বোচ্চ স্কোর করেছেন ৯৬।
নিরোশান ডিকওয়েলার বয়স সবে ২৭, তাই সেঞ্চুরি করে মিস্টার ফিফটি তকমা ছাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ তিনি আরো পাবেন তা সহজেই বলা যায়। তবে এই মুহুর্তে টেস্ট ক্রিকেটের মিস্টার ফিফটি তিনিই সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।