ঘড়ির কাঁটা তখন ম্যাচের সমাপ্তি রেখার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেসময় রাইট উইংয়ে বল পেয়েই বক্সে কাটব্যাক করে ঢুকে পড়েন লুইস হেনরিক। এরপর আর সময় নষ্ট করেননি, দক্ষ ফরোয়ার্ডের মত কার্ল শটে সরাসরি গোল – গোওওওওল! একটা গোল, পুরো দেশ, পুরো বিশ্বের সমর্থক যে গোলের জন্য তীর্থের কাকের মত হয়ে বসেছিল সেই গোল অবশেষে এলো।
বিশ্বকাপ নয়, কোপা আমেরিকা নয়, বড় কোন প্রতিপক্ষও নয়। তবু চিলির বিপক্ষে হেনরিকের গোল উল্লাসের বাদ ভেঙে দিয়েছে; সেটা হবেই না বা কেন, কত দিন পর ব্রাজিল একটু খানি স্বস্তি দিলো।
আগের ম্যাচেই প্যারাগুয়ের বিপক্ষে হেরে গিয়েছিল দলটি। চিলির বিপক্ষেও একই ফলাফল হলে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়েই শঙ্কা দেখা দিতো। সেই চাপ মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেই ভুল করে বসে তাঁরা, ম্যাচ শুরুর পরপরই ড্যারিও ওসিরিও দানিলোকে পরাস্ত করে পাস দেন ফেলিপে লয়োলাকে। লয়োলা এরপর খুঁজে নেন ফাঁকায় দাঁড়ানো ভার্গাসকে।
টিভিসেটের সামনে ঠিকঠাক বসার আগেই দল পিছিয়ে পড়ায় আরো একটা দুর্বিষহ ম্যাচ দেখার মানসিক প্রস্তুতি বোধহয় নিয়েই ফেলেছিল সমর্থকরা। তবে এদিনের চিত্রনাট্য ছিল ভিন্ন, ভিনিসিয়াস জুনিয়রের পরিবর্তে জায়গা পাওয়া স্যাভিনহো বিরতির ঠিক আগে দারুণ ড্রিবলিংয়ে গোলপোস্টের ঠিক সামনে খুঁজে নেন ইগর জেসুসকে, হেডারের সাহায্যে জেসুস দলকে সমতায় ফেরান তখনই।
বিরতি থেকেই ফিরেই আবারো গোলের দেখা পেয়েছিল সেলেসাওরা। যদিও দুর্ভাগ্য, দুর্দান্ত ভঙ্গিতে জালের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছিলেন রাফিনহা, কিন্তু অফসাইডের ফাঁদ এড়াতে পারেননি। পরের সময়ে আর কোন গোল না হলে ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যায় ম্যাচ, তবে ৬৮ মিনিটের সময় বদলি হিসেবে নামা হেনরিক অন্তিম মুহূর্তে ম্যাচের ভাগ্য লিখে দেন নিজ হাতে।
চিলির বিপক্ষে ম্যাচের আগে বাছাইপর্বের শেষ ছয় ম্যাচের চারটিতেই হেরেছিল ব্রাজিল। তাঁদের পায়ের নিচের মাটি কতটা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিল সেটা সহজে অনুমেয়, চিলিকে হারানো তাই বড্ড দরকার ছিল। দরকারী কাজটা অবশ্য সম্পন্ন হয়েছে, এবার প্রয়োজন ধারাবাহিকতা।