অ্যালেক্স ফার্গুসন মানেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড মানেই স্যার অ্যালেক্স ফারগুসন – একই ফুলের দুইটি বৃন্ত কিংবা দুই দেহ এক মন। তবে আত্মিক এই বন্ধনে টান লেগেছে এবার, পুরোপুরি ছিন্ন না হলেও আনুষ্ঠানিক সম্পর্কের ইতি ঘটতে যাচ্ছে। ক্লাবের ‘বৈশ্বিক শুভেচ্ছাদূত’ হিসেবে আর দেখা যাবে এই কিংবদন্তিকে।
তেরোটা প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা, দুইটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, পাঁচটা এফএ কাপ আর চারটা লিগ কাপ – ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যে সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে তাঁর অবিসংবাদিত কারিগর তিনি। ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে মৌসুমের পর মৌসুম তিনি লিখে গিয়েছিলেন ইতিহাস, সেজন্যই ২০১৩ সালে কোচিং থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিলে তাঁকে ক্লাবের বৈশ্বিক শুভেচ্ছাদূত হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়।
সেই সাথে ক্লাব ডিরেক্টরের পদ দেয়া হয়েছিল এই ফুটবলগুরুকে। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি একাধারে দুইটি দায়িত্ব পালন করে আসছেন; গ্যালারিতে নিয়মিত খেলা দেখতে হাজির হন, বিভিন্ন নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তে মতামত দেন। এমনিকি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রত্যাবর্তনে প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ছিল তাঁর।
এসময়টাতে বেতন হিসেবে সবমিলিয়ে কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড ফারগুসনকে দিয়েছে ক্লাব ম্যানেজম্যান্ট। কিন্তু এখন এই খরচটুকু বাঁচাতে চায় তাঁরা, সে জন্যই চলতি মৌসুম শেষে দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেয়া হবে তাঁকে। যদিও তাঁর বিদায়ের সংবাদে আর্থিক কোন বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।
ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ম্যানচেস্টার সিটি কি কখনো ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামবে – এমন প্রশ্নে এই ইংরেজ অকপটে জানিয়েছিলেন তাঁর জীবদ্দশায় অন্তত এটা ঘটবে না। কিন্তু এখন প্রতিটা ডার্বিতে সিটিজেনরা স্পষ্ট ফেভারিট হিসেবেই খেলে। রেড ডেভিলদের অধ:পতন এতেই স্পষ্ট, আর এই অধ:পতন চোখের সামনে দেখেছেন তিনি।
আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক শেষ হওয়ায় হয়তো স্যার ফার্গিকে আগের মত দেখা যাবে না ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। তবে যে ক্লাবকে নিজের ছেলের মত গড়ে তুলেছেন, সেটির ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষায় থাকবেন তিনি, তা নিশ্চিত।