প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে সবচেয়ে বেশি দরকার কি? আগ্রাসী ব্যাটিং নাকি আঁটসাঁট বোলিং নাকি তীক্ষ্ণ ফিল্ডিং – সবকিছুই প্রয়োজন আসলে, তবে এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন ‘কমিটমেন্ট’।
একাদশের প্রত্যেকে, স্কোয়াডের প্রত্যেকে নিজের দায়িত্বের প্রতি কমিটেড থাকলে এমনিতেই সব বিভাগে সামর্থ্যের শতভাগ প্রতিফলন ঘটে। সনাথ জয়াসুরিয়া শ্রীলঙ্কার কোচ হওয়ার পর থেকে ঠিক এখানটায় সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়েছেন।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তাঁকে। শুরুটা ভাল হয়নি, ৩-০ ব্যবধানে ভারতের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে গিয়েছিল লঙ্কানরা। কিন্তু এরপরই বদলে যায় সবকিছু, ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতকে ২-০ তে হারিয়ে প্রতিশোধ নেয় স্বাগতিকরা।
ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ডকে সিরিজ হারাতে না পারলেও তৃতীয় টেস্টে ঠিকই জয় তুলে নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ধবল-ধোলাই করে তো একেবারে বিশ্ব ক্রিকেটকেই চমকে দিয়েছে তাঁরা, সবশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাঁদের প্রিয় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সিরিজ হারিয়ে দিয়েছে কুশল মেন্ডিসরা।
কিন্তু হঠাৎ এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন কিভাবে, মাস কয়েক আগেও ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কা পরাশক্তি রূপে আবির্ভূত হলো কি করে – উত্তর খুঁজতে আপনাকে চোখ রাখতে হবে জয়াসুরিয়ার ভিশন আর পরিকল্পনার ওপর।
দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি ড্রেসিংরুমের শৃঙ্খলা আর সংস্কৃতিতে আমূল বদল এনেছেন। ঐচ্ছিক অনুশীলনের নিয়ম বাদ দিয়েছেন, শিষ্যদের বাধ্য করেছেন দলের প্রতি আরও নিবেদিত হতে।
মোটের ওপর চারটি ভিত্তি স্থাপন করেছেন এই কিংবদন্তি – ফিটনেসে উন্নতি, ফিল্ডিংয়ে উন্নতি, রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে তীক্ষ্ণতা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলার প্রতি দলের প্যাশন পুনরুজ্জীবিত করা।
এই কাঠামোগত পরিবর্তন শ্রীলঙ্কার ড্রেসিংরুমে কেবল শৃঙ্খলাই তৈরি করেনি বরং মানসিকতাকেও নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে। ক্রিকেটারদের মধ্যে ক্ষুধা তৈরি হয়েছে আবারো, যা লম্বা সময় ধরে অনুপস্থিত ছিল।
সফলতার পুরষ্কার হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ থেকে নিয়মিত কোচে প্রমোশন পেয়েছেন জয়াসুরিয়া। এখন দেখার বিষয়, উন্নতির পথে উত্তরসূরিদের আর কতটা দূরে নিতে পারেন তিনি।