ডি বক্সের ডান পাশ থেকে ক্রস করলেন ভিতিনহা, গোলের নেশায় উন্মুখ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ততক্ষণে অবশ্য একটু বেশিই এগিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে হেডে গোল দিবেন সেই সম্ভাবনা শূন্যের ঘরে নেমে আসে, কিন্তু তাই বলে গোল করবেন না নাকি তিনি। নিজের শরীরটা হাওয়ায় ভাসিয়ে মারলেন ‘বাইসাইকেল কিক’; চল্লিশ ছুঁই ছুঁই বুড়োটার এমন কান্ডে বোকা বনে গেলেন পোলিশ গোলরক্ষক আর বলটা সরাসরি আশ্রয় নেয় জালে।
২০১৮ সালে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সেই গোল করার ছয় বছর আবারো বাইসাইকেল কিকে গোল করলেন পর্তুগিজ যুবরাজ। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মত এমন গোল করলেন তিনি, যার মধ্যে জাতীয় দলের জার্সিতে করেছেন দুইবার।
দারুণ একটা গোল করার দিনে এই তারকা দ্যুতি ছড়িয়েছেন সম্ভাব্য সেরা উপায়েই। পোল্যান্ডের বিপক্ষে পর্তুগাল করেছে সবমিলিয়ে পাঁচ গোল, তিনটিতেই সরাসরি অবদান রেখেছেন তিনি। শুরুটা হয়েছিল ৭২ মিনিটের সময়, পেনাল্টি স্পট থেকে পানেনকা শটে এই স্ট্রাইকার খুঁজে নেন জালের ঠিকানা।
মিনিট দশেক পরে সতীর্থকে দিয়ে গোল করান রোনালদো, ডি বক্সের বাইরে থেকে রক্ষণ চেরা পাসে তিনি খুঁজে নেন পেদ্রো নেতোকে। তবে সব কিছু ম্লান হয়েছে বাই সাইকেল কিকের উজ্জ্বলতায়। ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়েও তিনি রিফ্লেক্স আর ডেডিকেশনের যে দৃষ্টান্ত দেখালেন সেটা অনন্য – তাঁকে আসলে এভাবেই মানায়।
সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ সুপারস্টার আপাতত ছুটছেন লক্ষ্যহীন, কোন অর্জনের নেশায় নয় বরং ফুটবলটাকে উপভোগ করার দিকেই বেশি মনোযোগ তাঁর। তবু অর্জন আর রেকর্ড নিজে নিজেই হয়তো তাঁর দরজায় হাজির হয়, এইতো পোল্যান্ডের বিপক্ষে জয় দিয়ে সার্জিও রামোসকে টপকে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ জয়ের মালিক বনে গেলেন তিনি।
যদিও রোনালদো ভক্তদের সব অপেক্ষা এখন ‘১০০০’ গোলের মাইলফলক ঘিরে। ইতোমধ্যে ৯১০ গোলে পৌঁছে গিয়েছেন, বাকি আছে ৯০ গোল। মাস দুয়েক পর যিনি চল্লিশতম জন্মদিন পালন করবেন তাঁর জন্য কাজটা মোটেই সহজ নয়। তবু নামটা যখন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তখন আশা তো রাখতেই হয়। কি জানি, হয়তো কোন একদিন বাই সাইকেল কিকে গোল দিয়েই চার অঙ্কের ভিন গ্রহে পা রাখবেন তিনি।