‘আমি কপিলকে বাদ দেইনি’

১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেবের সাথে আরেক সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কারের সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্বই ছিলো। কিন্তু এক আকস্মিক ঘটনায় তাদের সম্পর্কের মাঝে কিছুটা হলেও আঘাত এনেছিলো।

ঘটনা ১৯৮৪ সালের। ইংল্যান্ড তখন ভারত সফরে আসে এবং দুই দলই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো কলকাতা টেস্টের। যেই টেস্টে ভারত জয় পায় ৮ উইকেটের। তবে সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার এবং ১৯৮৩ এর বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেবকে সেই টেস্ট থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং যেই সিদ্ধান্ত অনেকের জন্যই বিস্ময়কর ছিলো কারণ কপিল তখন তাঁর সেরা ফর্মে ছিলেন।

মূলত, দিল্লী টেস্টে বাজে শট খেলার কারণেই তাকে বাদ দেওয়া হয়। যেই দিল্লী টেস্টে ভারত হেরে যায়! দ্বিতীয় টেস্টে খেলা হয় দিল্লীর ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে (বর্তমান অরুন জেটলি স্টেডিয়াম)। সেই টেস্ট পঞ্চম দিনে ড্র এর দিকেই যাচ্ছিলো। এক আগ্রাসী শটে কপিল উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন তিনি! এরপর শেষ উইকেটগুলো দ্রুত পড়ে যাওয়ায় জয় পায় ইংলিশরা।

পরের টেস্টেই ইডেন গার্ডেনে বাদ দেওয়া হয় কপিলকে। তখন ভারতীয় দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বে ছিলেন চান্দু বর্দে। দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলার শাস্তিস্বরুপ কপিলকে তিনি পরের টেস্টে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন নির্বাচক কমিটির সদস্য ছিলে সুনিল গাভাস্কারও। এবং কপিল বলেন যে সেই ম্যাচ হারার মূলে ছিলেন ওপেনাররা।

তবে গাভাস্কারের দাবি যে এই কিংবদন্তি অলরাউন্ডারের টেস্ট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে তার কোন ভূমিকা ছিলো না

কপিল বাদ পড়ায় কলকাতায় দর্শকরাও খুশি ছিলেন না। এমনকি তারা ‘নো কপিল, নো টেস্ট’ বলেও স্লোগান দিচ্ছিলেন। গাভাস্কারের দিকে তারা ফল এবং সবজিও ছুড়ে মারছিলেন! ওই ঘটনার পর গাভাস্কার বলেন তিনি আর কখনোই ইডেন গার্ডেনসে খেলবেন না।

এতো দিন পর গাভাস্কার সেই ব্যাপারে পরিষ্কার করেন যে কপিলের বাদ পড়ার ব্যাপারে তার প্রস্তাব ছিলো না। এবং তিনি বলেন যে দীর্ঘদিন ধরেই এটা শুধু একটা ভ্রান্ত গুজব ছিলো।

ভারতীয় এক গণমাধ্যমে গাভাস্কার বলেন, ‘কপিল দেব যা শুনেছে সেটার পুরোটাই একটা মিথ্যা গুজব। যেটা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। আমি কপিলকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে কিছুই বলিনি। ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে আমি নির্বাচক কমিটির একজন সদস্য ছিলাম। আমি শুধু নির্বাচক কমিটির দল নির্বাচনের সহকারী ছিলাম। কপিলকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব অন্য কেউ দিয়েছে।’

সুনীল গাভাস্কার বলছিলেন, ‘সুতরাং আমি এটাই বলছি আমি যা কিছুই করি, আমি যাই হই না কেনো আমি এতটাও স্টুপিড না যে আমি আমার ম্যাচ উইনারকে দল থেকে বাদ দিবো। তাও আমার একমাত্র ম্যাচ উইনারকে বাদ দিবো? আমি এটা কিভাবে করতে পারি! এটা কেউ কিভাবে চিন্তা করতে পারে!’

গাভাস্কার এটাও পরিষ্কার করেন যে কপিল এবং তার মধ্যে দুইজনের জন্যই দুইজনের কাছে সম্মান এখনো ঠিক আছে। তাদের মধ্যে সেই ঘটনা নিয়ে কোনো প্রকার দ্বন্দ্ব নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link