বিশ্বজয়ী আকবর আলীর অর্জনের সোনালি পালকে যুক্ত হল আরও একটি মুকুট। না, মুঘল সম্রাট মির্জা জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ আকবর নন। বাংলার একান্ত আপন আকবর আলী আরও একবার উঁচিয়ে ধরলেন বিজয়ের পতাকা। জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম টি-টোয়েন্টি আসরেই হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন। রংপুরকে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েই তুলে নিয়েছেন কাঙ্খিত শিরোপাটি।
চলতি বছর ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল এনসিএল টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা। উত্তরবঙ্গের দল রংপুরের অধিনায়কত্বের ভার পড়ে আকবার আলীর ২৩ বছরের চওড়া কাধঁটায়। বাকি দল গুলোয় যেখানে জাতীয় দলের বড় বড় তারকার ছড়াছড়ি, সেখানে ঘরোয়া লিগেরও তেমন বড় কোন নাম ছিল না রংপুরে। তবে অভিজ্ঞ আর তারুণ্যর মিশেলে দলকে তিনি নিয়ে গেছেন সবার ধরা-ছোয়ার বাইরে।
আকবরের দলের ব্যাটাররা টুর্নামেন্ট জুড়ে সেভাবে রান তুলতে পারেনি। বুদ্ধিদীপ্ত ফিল্ডিং সেটআপ, প্রতিপক্ষ বুঝে বোলিং পরিবর্তন, দলকে অনুপ্রেরণা দেওয়া, স্লিপের মত কঠিন ফিল্ডিং পজিশনে বিশ্বস্ত হাতে ক্যাচে লুফে নেওয়া সবেতেই ছিলেন সর্বেসর্বা। গ্রুপ পর্বে রাজশাহীর দেওয়া ১৯১ রানের টার্গেটেও দেখিয়েছিলেন নিজের বিধ্বংসী রূপ। ২৯ বলে ৬৮ রান করে দলকে নিয়েছিলেন জয়ের বন্দরে।
পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন তিনি। নয় ম্যাচে প্রায় ৩৫ গড়ে রান করেছেন ২০৮। ফিফটি হাঁকিয়েছেন দুইটি, স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৬৪। আছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ১০ রান সংগ্রহকের তালিকাতেও।
ফাইনালেও দেখা গেল আকবরের বাহাদুরি। পুরো টুর্নামেন্টতে অপরাজিত ছিল ঢাকা মেট্রো। পুরো আসর জুড়ে রীতিমতো রান উৎসবে মেতে থেকে ঢাকা মেট্রোকে মাটিতে টেনে নামায় আকবরের দল। অভিজ্ঞ আলাউদ্দিন বাবু আর মকিদুল ইসলামদের পেস তান্ডবে ফাইনালে হোচট খেল ঢাকা মেট্রো। আরও একটি লো স্কোরিং ফাইনাল, আরও একটি আকবরের জয়। শিরোপা জয়ের উল্লাস।
বাংলাদেশের একমাত্র অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী নায়ক হারিয়ে যাননি। নিজেকে তৈরি করছেন ধীরে ধীরে। একজন প্রকৃত সম্রাট তো এমনি। নিজের যা আছে তাই নিয়েই সর্বোচ্চটা দিয়ে জয় করেন নতুন নতুন মাইলফলক। বাংলার আকবরও সেই ধারা বজায় রেখেছেন। সপ্তাহ খানেক বাদেই শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ২০২৫। আকবরের নজর এখন নিশ্চয় সেখানেই। ‘আকবর দ্য গ্রেট’ ট্যাগটা ইতিমধ্যেই জড়িয়ে ফেলেছেন নিজের গায়ে। এখন দেখা যাক আসলেই কতটা গ্রেটনেস তিনি দেখাতে পারেন আগামীর দিনগুলোতে।