খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, পাকিস্তানের পেস বোলিং আক্রমণের সবচেয়ে বড় কান্ডারি ছিলেন মোহম্মদ আমির। ২০১৭ সালে তিনিই পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা। বাঁ-হাতি এই পেস বোলারকে আরো লম্বা সময় পাকিস্তানের হয়ে খেলতে দেখারই কথা ছিল ক্রিকেট বিশ্বের। তবে মাত্র ২৯ বছর বয়সে হঠাৎ করে গত বছর ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেন এই পেসার। তাঁর এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তান তো বটেই গোটা ক্রিকেট বিশ্বই যেন হতবাক হয়ে যায়।
তবে এই আকস্মিকতার সীমানা পেরোয় তিনি নিজেই যখন তাঁর অবসরের কারণ জানান। মোহম্মদ আমির তাঁর এই অবসরের দায় দেন পাকিস্তানের টিম ম্যানেজম্যান্টকে। বিশেষ করে পাকিস্তানের হেড কোচ মিসবাহ উল হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনুসের উপর আঙুল তুলেন এই পেসার। পাকিস্তান ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তির উপর এমন অভিযোগে অবাক হয়েছিল গোটা ক্রিকেট বিশ্বও।
মোহম্মদ আমির পাকিস্তানের টিম ম্যানেজম্যান্টের দ্বারা মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন। এমনকি পাকিস্তানের এই দুই কোচ তাঁর ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ার চেষ্টাও করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আমি বলেছিলেন এই দুই কোচ দায়িত্ব ছাড়লে তবেই তিনি আবার পাকিস্তানের হয়ে খেলবেন। তবে এই দুই কিংবদন্তির উপর অভিযোগ অনেকেই ভালো চোখে দেখেননি।
পাকিস্তানের সাবেক স্পিনার সাঈদ আজমলও সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তুমুল সমালোচনা করেছেন এই পেসারের। তিনি মনে করেন দুই কোচের বিরুদ্ধে এত মারাত্মক অভিযোগ আনা উচিৎ হয়নি মোহম্মদ আমিরের। যদিও আজমল বলেছেন তিনি আসলে জানেন না টিম ম্যানেজম্যান্টের সাথে আমিরের ঠিক কি হয়েছিল তবে তিনি মনে করেন একজন ক্রিকেটার তাঁর কোচের বিদায়ের দাবি জানাতে পারেন না। বরং আমিরের উচিৎ ছিল খেলায় মনোযোগ দিয়ে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করা।
সাঈদ আজমল পাকিস্তানে এক সাক্ষাৎকারে আমিরের প্রতি বিন্দু মাত্র সহানুভূতি না দেখিয়ে আজমল বলেন, ‘আমিরের কথা শুনে মনে হয় তাঁর সাথে খারাপ কিছু হয়েছে। যদি আমি আসলে জানিনা তাঁর আর টিম ম্যানেজম্যান্টের মধ্যে কী সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু সে বলছে মিসবাহ উল হক ও ওয়াকার ইউনুস দায়িত্ব ছাড়লে তবেই সে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এমন লোকেদের সাথে আসলে এমনই হয়। একজন ক্রিকেটার এই ধরনের দাবি করতে পারেন না। তাঁর উচিৎ নিজের পারফরম্যান্সে মনোযোগ দেয়া।’
সাঈদ আজমল মনে করেন আমির যেহেতু অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সেহেতু তাঁর আর ক্রিকেটে ফেরার কথা আসতে পারেনা। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমির হঠাৎ করে তাঁর আবসরের ঘোষণা দিয়েছে। তবে এখন আবার সে ফেরার কথা ভাবছে। সে যদি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তবে তাঁর সেখানেই অটুট থাকা উচিৎ।’
সবমিলিয়ে টিম ম্যানেজম্যান্ট বা কোচদের সাথে আমিরের কী হয়েছিল, তাঁর অবসরের সিদ্ধান্ত এবং তিনি আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন কি ফিরবেন না সব যেন এক ধোঁয়াশার মত। শোনা যাচ্ছে তিনি ইংল্যান্ডের পাসপোর্ট নিয়ে সেখানেই স্থায়ী হওয়ার কথা ভাবছেন। এসবের উত্তর হয়তো সময় কিংবা মোহম্মদ আমিরই দিতে পারেন।