সাত নম্বর বিপদ সংকেত

গত পাঁচ বছরে সাত নম্বর ব্যাটিং পজিশনের সমাধান পেতে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল ১৪ জন ক্রিকেটারকে। এতো জনকে সুযোগ দিয়েও কোন সমাধান হয়নি। এই পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এই সময়ে খেলা ২২ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ছিল ২৬.৭১।

সব ফরম্যাটে টানা দশ ম্যাচ জয়হীন থাকার পর অবশেষে গতকাল জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে জয় পেয়ে স্বত্বি থাকলেও বড় কিছু সমস্যর সমাধান এখনো হয়নি। বিশেষ করে সাত নম্বর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে। এই পজিশনে দীর্ঘ দিন হলোই স্থায়ী সমাধান খুঁজছে বাংলাদেশ।

গত পাঁচ বছরে সাত নম্বর ব্যাটিং পজিশনের সমাধান পেতে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল ১৪ জন ক্রিকেটারকে। এতো জনকে সুযোগ দিয়েও কোন সমাধান হয়নি। এই পাঁচ বছরে সবচেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এই সময়ে খেলা ২২ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ছিল ২৬.৭১।

গত পাঁচ বছরে সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেন সাত নম্বর পজিশনে ব্যাট করেছেন ১২ ম্যাচে। যেখানে সাব্বিরের ব্যাটিং গড় ছিল ১৭.৯০ ও নাসিরের ছিল ১৫.৮৭। এই পজিশনে সবচেয়ে সফল ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই পজিশনে ১১ ম্যাচ খেলা এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড় ৪৮.২৫।

সাত নম্বর পজিশনে ৪ ম্যাচ ব্যাট করা সৌম্য সরকারের ব্যাটিং গড় ১৫.৩৩ ও তিন ম্যাচ ব্যাট করা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ব্যাটিং গড় ৪০। সবচেয়ে বেশি ব্যর্থ ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৬ ম্যাচ ব্যাট করা মিরাজের ব্যাটিং গড় ১.৭৫।

এছাড়া এক বার করে সাত নম্বর পজিশনে ব্যাট করা আবুল হাসান রাজু, মেহেদি হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, আরিফুল হক, সানজামুল ইসলামের ব্যাটিং গড় শূন্য। নুরুল হাসান সোহানের ৪৪ ও তানভির হায়দারের ব্যাটিং গড় ২।

সাত নম্বর পজিশনে টিম ম্যানেজমেন্ট সর্বশেষ সুযোগ দিয়েছেন আফিফ হোসেনকে। প্রথম বার সুযোগ পেয়ে অবশ্য ভালোই করেছেন আফিফ। গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২২ বলে অপরাজিত ২৭ রান করেন তিনি। তার ছোট ঝড়েই চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ।

আফিফ ভালো করলেও তিনি দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী সমাধান হতে পারবেন কি না, সেটা সময়ই বলে দেবে। ঘরোয়া ক্রিকেটেও দীর্ঘ দিন হলো সাতে ব্যাট করা মেহেদি হাসানকেও এই পজিশনে ফিট মনে হয়। তবে তাকে আরো অনেক বেশি কাজ করতে হবে।

এছাড়া অনূর্ধ্ব -১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ব্যাটসম্যান শামীম পাটোয়ারী ইতিমধ্যে তার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে নিজকে তৈরি করেছেন এবং আগামীতে তাকে মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করতে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বিশ্বকাপের আগেই সবার ব্যাটিং পজিশন নিশ্চিত করতে চান। তিনি বলেন, বিশ্বকাপের ছয় মাস আগে জানতে হবে আমাদের ব্যাটিং লাইন আপ কী হতে যাচ্ছে। এই সিরিজ জয়ও গুরুত্বপূর্ণ যেখানে অনেক পয়েন্ট রয়েছে। দুই বছরের ভিতর সব হবে।

শুধু সাত নম্বরেই নয়। সমস্য রয়েছে আরেক জন ওপেনার নিয়েও। এখনো তামিম ইকবালের সাথে ওপেনিংয়ে সে ভাবে সফল হতে পারেননি কেউ। দীর্ঘ দিন হলো তামিমের সাথে ইনিংস উদ্বোধন করেও ধারাবাহিক হতে পারেননি লিটন দাস। গত সাত ওয়ানডেতে টানা ব্যর্থ ছিলেন এই ওপেনার। তবে ডোমিঙ্গো আগলে রাখছেন লিটনকে।

তিনি বলেন, ‘লিটনের প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস আছে, আমার মনে হয় সে একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়। তাঁর ভাগ্যের কিছুটা দরকার আছে। আমি মনে করি না তার দক্ষতা নিয়ে কোন প্রশ্ন রয়েছে। আমি মনে করি প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো আপনি যে খেলোয়াড়দের সমর্থন করছেন তা নিশ্চিত করাI’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত সব কিছু সমাধান করার। গতকাল প্রথম ওয়ানডে চলাকালীন তিনি জানিয়েছেন এই সব বিষয় নিয়ে খেলোয়াড় ও কোচদের সাথে কথা বলতে চান তিনি। তবে কাউকে চাপ দিতে চাননা বোর্ড সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘লিটন দাস, সৌম্য এবং মিঠুন ভালো খেলোয়াড়। ক্রিকেটাররা খারাপ সময় পার করে। আমাদের খেলোয়াড় ও কোচদের সাথে কথা বলতে হবে। আমি শীর্ষ থেকে একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এটি হবে নেতিবাচক।
লিটন টি-টোয়েন্টিতে হাত খুলে খেলতে পারে, তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত যে সে পাঁচ নাম্বারে ভালো। আমাদের তাদের সাথে বসতে হবে। আমি তাঁদের উপর কোনও চাপ দিতে চাই না। আমি মনে করি আমাদের একটি সমাধান হবে।’

– ক্রিকবাজের ছায়া অবলম্বনে

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...