দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্স সামনে আনলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে(আইপিএল) নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর কিংবদন্তি হয়ে ওঠার আগে এই প্রোটিয়া তারকা শুরু করেছিলেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে। আর সেখানকার তিন বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি।
ক্রিকেট ডট কম-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডি ভিলিয়ার্স জানান, দিল্লিতে কাটানো সময়টা তাঁর জন্য ‘তেতো-মিষ্টি’ অভিজ্ঞতা ছিল। কারণ সেই ড্রেসিংরুমে ছিল কিছু ‘বিষাক্ত চরিত্র’, যাদের সঙ্গে খেলা তাঁর জন্য সহজ ছিল না।
ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘আমি নাম নিতে চাই না। কাউকে অপমান করাও ঠিক না। কিন্তু দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ছিল একদম এলোমেলো। সেখানে অনেক বিষাক্ত চরিত্র ছিল। তবে অনেক কিংবদন্তি খেলোয়াড় ছিল দলে। তাই সময়টা আমার কাছে তেতো-মিষ্টি মিশ্র অভিজ্ঞতা।
গ্লেন ম্যাকগ্রা, ড্যানিয়েল ভেটোরিদের সঙ্গে সময় কাটানো ছিল ক্যারিয়ারের হাইলাইটস। ছোটবেলায় যাঁদের দেখে বড় হয়েছি, তাঁদের সঙ্গে খেলতে পেরে ভালো লাগলেও, সেই ড্রেসিংরুমে কিছু ক্যান্সারের মতো ক্ষতিকর চরিত্র ছিল। তবে তিন বছর খুব মিশ্র অভিজ্ঞতা ছিল আমার জন্য।’
২০০৮ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে যোগ দেন ডি ভিলিয়ার্স। প্রথম মৌসুমটা ব্যাট হাতে খুব একটা ভালো যায়নি তাঁর। কিন্তু ২০০৯ সালে নিজের জাত চেনান। সেই আইপিএলে খেলেন দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটান, করেন নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। তখনই মনে হয়েছিল দিল্লির ভবিষ্যৎ ব্যাটিং স্তম্ভ হয়ে উঠবেন তিনি।
তবে বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি বলেছিল, ২০১১ সালের মেগা নিলামে তাঁকে রিটেইন করা হবে। কিন্তু শেষমেশ তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘২০০৯ ভালো গিয়েছিল। প্রায় পুরো মৌসুমই খেলেছিলাম, ভেবেছিলাম পরের বছর আমিই দলের মূল ব্যাটার হবো। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখি আমাকে খেলানো হচ্ছে না। বলা হয়েছিল আমি রিটেইন হবো। এরপর হঠাৎ দেখি আমি নিলামে! বুঝতেই পারিনি কী হলো। খুবই অদ্ভুত লেগেছিল।’
তবে দিল্লির এই সিদ্ধান্তই ডি ভিলিয়ার্সের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেয়। পরের মৌসুমে তাঁকে দলে নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে এক দশকেরও বেশি সময় খেলে তিনি হয়ে ওঠেন আইপিএলের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিদেশি খেলোয়াড়দের একজন।
সেই গল্পটা এখন ইতিহাস। কিন্তু তার পেছনের যন্ত্রণা আজও ডি ভিলিয়ার্সকে নাড়িয়ে দেয়—তাঁর এই স্বীকারোক্তিই হয়তো দিল্লি শিবিরের সেই সময়কার বাস্তব চিত্রটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।