বাংলাদেশ ক্রিকেটে চলছে ব্যস্ত সময়, যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। এমন সময়েও নির্বাচক কমিটির দায়িত্বে মাত্র দুজন — এ যেন অবিশ্বাস্য এক বাস্তবতা। তাই তো চাইলেও দুই জোড়া চোখ নজর রাখতে পারছে না সব জায়গায়, আড়ালে চলে যাচ্ছে অনেক প্রতিভা।
জাতীয় দল থেকে শুরু করে বিভাগীয় পর্যায় সব মিলিয়ে অনেক ক্রিকেটারের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব তাঁদের হাতে। রয়েছে জাতীয় লিগের দল গঠনের ব্যস্ততা। বয়সভিত্তিক দলের দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে সমান তালে, চোখ রাখতে হচ্ছে ভবিষ্যৎ তারকাদের উপর।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচক প্যানেল থেকে সরে দাঁড়ান হান্নান সরকার। এর ফলে প্যানেলে তিনের বদলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় দুই। সব দায়িত্ব গিয়ে বর্তায় প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন ও সদস্য আবদুর রাজ্জাকের ওপর। আর দিন গোনা শুরু হয় কবে আসবেন অন্য কেউ?
মাঝেমধ্যে তৃতীয় নির্বাচকের গুঞ্জন শোনা গিয়েছে ঠিকই, তবে ছয় মাস পার হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে কে বসবেন তা নিয়েও সংশয়ের মেঘ কাটেনি। যদিও নারী দলের নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদকে নিয়ে আলোচনা চলেছিল, সেটা এখনও ওখানেই সীমাবদ্ধ।
মাঝের সময়টাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্যালেন্ডার ছিল বেশ ভরপুর। জাতীয় দল খেলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট, পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে পরপর দুটি টি–টোয়েন্টি সিরিজ, শ্রীলঙ্কায় পূর্ণাঙ্গ সফর, এরপর ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে আরেকটি সিরিজ। একই সঙ্গে ‘এ’ দল খেলেছে নিউজিল্যান্ড ‘এ’-এর বিপক্ষে, বর্তমানে তারা সফর করছে অস্ট্রেলিয়ায়। এছাড়াও হাই পারফরম্যান্স দলেরও আলাদা সিরিজ আয়োজন করতে হয়েছে।
ফলে দুই নির্বাচকের এক জায়গায় বসে কাজ করার সময়ও হয়নি। আজ একজন সিলেট তো আরেকজন রাজশাহী—বিভিন্ন ভেন্যুতে পালা করে উপস্থিত থেকেছেন তাঁরা।
সামনে আরও ব্যস্ত সময়। নেদারল্যান্ডস সিরিজ, এশিয়া কাপ, জাতীয় লিগের টি–টোয়েন্টি আসর, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ—সব মিলিয়ে ব্যস্ততা আরও বাড়বে।
তবে নির্বাচকদের এই চাপ কমানোর ব্যাপারে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেছেন, ‘বিসিবি সভাপতি ১৮ আগস্ট দেশে ফিরবেন। তিনি ফেরার পরপরই আমরা এটা করে ফেলব।’ এখন আশ্বাসের বাস্তবায়ন কবে হবে, এটা এখন দেখার অপেক্ষা।