বিশ্বকাপ-চমক ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ

গত বিশ্বকাপে সাধারণ দর্শকদের কাছে সারপ্রাইজ প্যাকেজ হিসেবে আগমন ঘটেছিল ক্রোয়েশিয়ার। অথচ একটুই চোখ-কান খোলা রাখা দর্শকমাত্রই জানেন ক্রোয়েশিয়ার উঠে আসার গল্পটা। ২০১৪ বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড, ২০১৬ ইউরোতে দ্বিতীয় রাউন্ড, ২০১৮ বিশ্বকাপে ফাইনাল—ক্রোয়েশিয়ার উন্নতি একদিনে হয়নি।

ধাপে ধাপে এই পর্যায়ে উঠে এসেছে তাঁরা। ফ্রান্সের কাছে বিশ্বকাপ শিরোপা হারিয়ে নতুন লড়াই শুরু হয়েছে তাদের। লুকা মদ্রিচ কি পারবেন নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টানার পূর্বে একটা শিরোপা ক্রোয়েশিয়াবাসীদের হাতে তুলে দিয়ে যেতে?

গোলরক্ষক

ডোমিনিক লিভাকোভিচ (দিনামো জাগরেব), লভ্রে কালিনিচ (হাদজুক স্প্লিত), সিমোন স্লুগা (লুটন টাউন)

ডিফেন্ডার

দেজান লভরেন (জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গ), ডোমাগোয় ভিদা (বেসিকতাস), দুজে কালেতা-কার (অলিম্পিক মার্শেই), ইয়োসকো গভিয়ারদোল (আরবি লাইপজিগ), মাইল স্কোরিচ (ওসিয়েক), সিমে ভ্রসালিয়োকো (আতলেতিকো মাদ্রিদ), ইয়োসিপ জুরানোভিচ (লেগিয়া ওয়ারশ) বরনা বারিসিচ (রেঞ্জার্স), ডোমাগোয় ব্রাদারিচ (লিল)

মিডফিল্ডার

লুকা মদ্রিচ (রিয়াল মাদ্রিদ), মাতেও কোভাচিচ (চেলসি), মার্সেলো ব্রোজোভিচ (ইন্টার মিলান), মিলান বাদেল (জেনোয়া), নিকোলা ভ্লাসিচ (সিএসকেএ মস্কো), মারিও পাসালিচ (আতালান্তা), লুকা ইভানুসেচ (দিনামো জাগরেব),

ফরোয়ার্ড

ইভান পেরিসিচ (ইন্টার মিলান), ইয়োসিপ ব্রেকালো (ভলফসবুর্গ), আন্তে রেবিচ (এসি মিলান), মিসলাভ অরসিচ (দিনামো জাগরেব), আন্দ্রে ক্রামারিচ (হফেনহেইম), ব্রুনো পেতকোভিচ (দিনামো জাগরেব), আন্তে বুদিমির (ওসাসুনা)

কোচ: জ্লাতকো দালিচ

অধিনায়ক: লুকা মদ্রিচ

  • শক্তিমত্তা

তিনবছর আগে ফাইনাল খেলেছিল যার উপর ভিত্তি করে, তার উপরে ভিত্তি করেই ইউরো যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। ক্রোয়েশিয়ার বড় শক্তির জায়গা মিডফিল্ড। ৩৫ বছর বয়সেই লুকা মদ্রিচ দিয়ে যাচ্ছেন তার সেরাটা। ইনজুরি আক্রান্ত মৌসুমে রিয়ালের ভরসার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন, প্রতি ম্যাচেই নিজের সেরা খেলাটা দিয়ে গিয়েছেন। সেই হিসেবে তাকে ঘিরেই সাজানো হবে ক্রোয়েশিয়ার ট্যাক্টিকস।

তার সঙ্গে আছেন ইন্টারের লিগজয়ী মার্সেলো ব্রোজোভিচ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা চেলসির মাতেও কোভাচিচ। গত বিশ্বকাপের পর পরই অবসর নেওয়া ইভান রাকিতিচের জায়গাটা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চালাতে হতে পারে কোচ জ্লাতকো দালিচকে। সে জায়গায় সিএসকেএ মস্কোর নিকোলা ভ্লাসিচ বেশ কার্যকর। এছাড়াও আতালান্তার মারিও পাসালিচও রাডারে আছেন দালিচের।

  • দুর্বলতা

গত বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার সাফল্যের নায়কেরাই নেই এবার তাদের সাথে। বিশ্বকাপে মন ভোলানো পারফরম্যান্স দেওয়া গোলরক্ষক দানিয়েল সুবাসিচ, মিডফিল্ডার ইভান রাকিতিচ ও স্ট্রাইকার মারিও মানজুকিচ; সকলেই বয়সের কারণে বিশ্বকাপের পরপর অবসর নিয়েছেন। সুযোগ করে দিয়েছেন দালিচকে তাদের রিপ্লেসমেন্ট খোজার। কিন্তু সেই শূন্যস্থান পুরোপুরি সম্পন্ন করা হয়নি।

মানজুকিচের জায়গাটা ডায়নামো জাগরেবের ব্রুনো পেতকোভিচকে দিয়েছেন দালিচ। ট্র্যাডিশনাল স্ট্রাইকার হিসেবে তার উপরেই নির্ভর করছে ক্রোয়েশিয়ার ভাগ্য। এই মিডফিল্ড থেকে বলের অভাব হবে না। কিন্তু ফিনিশিং কতটা করতে পারেন, সেটা নিয়েই চিন্তা।

রক্ষণভাগটাও বেশ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে তাকে। ন্যাশনস লিগের ৬ ম্যাচে হজম করেছে ১৬ গোল। রাইটব্যাক ভ্রসালিয়োকো অনেকদিন ধরেই চোটে। ইউঞ্জুরি থেকে ফেরত আসা রাইট উইঙ্গার আন্তে রেবিচের ওপর ভরসা রাখতে হবে তাকে। মিডফিল্ড বাদে তাই সবজায়গাতেই সামান্য চিন্তার ভাঁজ দালিচের কপালে।

  • সম্ভাব্য একাদশ

ক্রোয়েশিয়ার মূল ছক ৪-২-৩-১। তবে সময়ে সময়ে তা পরিবর্তনও হতে পারে। মিডফিল্ডে বিশাল অপশন থাকার সুবিধা এটাই। ভরেনের সঙ্গী হিসেবে মার্শেইর প্রতিভাবান ডিফেন্ডার দুজে কালেতা-কারের খেলার সম্ভাবনা বেশি।তবে অভিজ্ঞতার জন্য ডোমায়োগ ভিদাও নামতে পারেন।

ব্রোজোভিচ আর কোভাচিচের অদল বদল নির্ভর করবে কেমন ফুটবল খেলাতে চান দালিচ তার উপরে। আক্রমণাত্বক হলে কোভাচিচ, ডিফেন্সিভ হলে ব্রোজোভিচ। ভ্লাদিচ, প্যালাসিচের ক্ষেত্রেও তাই। আক্রমণাত্বক হলে ভ্লাদিচ, ডিফেন্সিভ হলে প্যালাসিচ।

প্রতিপক্ষ ও ম্যাচ: (বাংলাদেশ সময়)

ইংল্যান্ড, ১৩ জুন, সন্ধ্যা ৭টা

চেক প্রজাতন্ত্র, ১৮ জুন, রাত ১০টা

স্কটল্যান্ড, ২৩ জুন, রাত ১টা

বিঃদ্রঃ রাত ১২টার পর পরবর্তী দিন ধরা হয়েছে

তিন বছর আগে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা দল নিয়ে আশার আলো জ্বালিয়ে আছে ক্রোয়েটরা, তবে সেটা কতটুকু জ্বলতে পারবে তা নির্ভর করছে মদ্রিচ, কোভাচিচদের উপরই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link