সোনাম ইয়েশে, তাঁকে নিশ্চয়ই আগে কেউ চিনত না। তবে, এবার সবাই চিনতে বাধ্য। ক্রিকেট ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় লিখলেন ভুটানের এই বাঁহাতি স্পিনার।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে—আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া, কোনো স্তরেই—এর আগে কেউ এক ম্যাচে আট উইকেট নেননি। সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখালেন ২২ বছর বয়সী ইয়েশে। হ্যাঁ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই।
গেলেফুতে মিয়ানমারের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাত্র চার ওভারে ৭ রান খরচ করে ৮ উইকেট নেন ইয়েশে। তার বিধ্বংসী বোলিংয়ে ভুটানের ১২৭ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ৪৫ রানে গুটিয়ে যায় মিয়ানমার। এক তরফা এই ম্যাচে ইয়েশের পারফরম্যান্স হয়ে ওঠে পুরো সিরিজের সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়।

এর আগে পুরুষদের টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সাত উইকেট নেওয়ার কীর্তি ছিল মাত্র দু’জনের। ২০২৩ সালে মালয়েশিয়ার সিয়াজরুল ইদ্রাস চীনের বিপক্ষে ৭ রানে ৮ উইকেট নেন, আর ২০২৫ সালে বাহরাইনের আলি দাউদ ভুটানের বিপক্ষে ১৯ রানে শিকার করেন ৭ উইকেট।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরেও এমন কীর্তি খুবই বিরল। ২০১৯ সালে ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটে লেস্টারশায়ারের হয়ে কলিন অ্যাকারম্যান এবং ২০২৫ সালে বিপিএলে দুর্বার রাজশাহীর হয়ে তাসকিন আহমেদ—এই দু’জনই টি-টোয়েন্টিতে সাত উইকেট নিয়েছিলেন।
নারীদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ বোলিং ফিগার ৭ উইকেট বিনা রানে। ২০২৪ সালে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েন ইন্দোনেশিয়ার রোহমালিয়া। এছাড়া নেদারল্যান্ডসের ফ্রেডেরিক ওভারডাইক, আর্জেন্টিনার অ্যালিসন স্টকস এবং সাইপ্রাসের সামান্থি দুনুকেদেনিয়াও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাত উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন।

সোনাম ইয়েশে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক করেন ২০২২ সালের জুলাইয়ে, মালয়েশিয়ার বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচেই ১৬ রানে তিন উইকেট নিয়ে জানান দেন নিজের আগমনী বার্তা। যদিও এরপর উইকেটের বন্যা তেমনভাবে আসেনি।
এখন পর্যন্ত ৩৪ টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে তার সংগ্রহ ৩৭ উইকেট। তবে মিয়ানমারের বিপক্ষে এই ঐতিহাসিক পারফরম্যান্সে ইয়েশে প্রমাণ করে দিলেন—ক্রিকেটের নতুন ইতিহাস গড়তে কখনোই বড় নাম বা বড় দেশ হওয়া জরুরি নয়।










