ওয়ানডে ক্রিকেটে এর আগে সর্বোচ্চ রান ছিল ৪৪৪। সেটাও ইংল্যান্ডেরই করা। ২০১৬ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নটিংহামে। দু’বছর বাদে ২০১৮ সালে সেই একই মাঠে নিজেদের করা আগের রেকর্ডটিকে ছাপিয়ে যায় ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নির্ধারিত ৫০ ওভারে তারা স্কোরবোর্ডে তোলে ৪৮১ রান!
১৯ জুন, ২০১৮। নটিংহামের টেন্ট্র ব্রিজে এদিন টসে জিতে তৎকালীন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক টিম পেইন ইংল্যান্ডকে ব্যাটে পাঠায়। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় অজিদের জন্য। শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের উপর চড়াও হতে শুরু করে ইংলিশ দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জেসন রয় আর জনি বেয়ারস্টো।
তাঁদের উদ্বোধনী জুটি এনে দেয় ১১৭ বলে ১৫৯ রানের উড়ন্ত সূচনা। রয় ৬১ বলে ৮২ করে ফিরলেও বেয়ারস্টো খেলেন ৯২ বলে ১৩৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তিনে নামা অ্যালেক্স হেলসও এ দিন ঝড়ো এক সেঞ্চুরি হাঁকান। বেয়ারস্টোর সমান ৯২ বল খেলে তিনি করেন ১৪৭ রান। দু’জন মিলে ৩১ টি চার ও ১০ টি ছক্কা হাঁকান। অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যানেরও সেদিন ব্যাট চলেছে একদম বিদ্যুৎ গতিতে।
মাত্র ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ৩০ বলে খেলেন ৬৭ রানের এক বিস্ফোরক ইনিংস। ঝড়ো দুই সেঞ্চুরি আর দুই হাফ সেঞ্চুরিতে ৫০০’র পথেই হাঁটছিল ইংল্যান্ড। ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যেভাবে তাণ্ডব শুরু করেছিলেন তাতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ৫০০ রান দেখার অপেক্ষায় ছিল ক্রিকেট।
কিন্তু, মরগ্যান আউট হওয়ার পর মইন আলী (৯ বলে ১১ রান) আর জো রুট (৬ বলে ৪ রান) রানের গতিটাকে সেভাবে বাড়াতে পারেননি। তাই শেষ পর্যন্ত ৫০০ থেকে মাত্র ১৯ রান দূরত্বে থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস। আর এর মধ্যে ২৯০ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত দলীয় সংগ্রহের দিক দিয়ে সাড়ে চারশোর বেশি রান করার ঘটনা এই একটিই। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না হলেও লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এর আগে একবার ৪৫০-এর অধিক স্কোর হয়েছিল। ২০০৭ সালে ইংলিশ কাউন্ডি ক্রিকেটে গ্লস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৯৬ রান করেছিল সারে।
অস্ট্রেলিয়া সেদিন আটজন বোলার ব্যবহার করেন। এর মধ্যে কারো ইকোনমি রেটই সাত-এর নিচে ছিল না। আর অ্যান্ড্রু টাই ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বাদশ বোলার হিসেবে ১০০’র বেশি রান হজম করার লজ্জাজনক রেকর্ডে সামিল হন। অস্ট্রেলিয়া জবাব দিতে নেমে অল আউট হয় মাত্র ২৩৯ রানে, আর বরণ করে রানের বিবেচনায় নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হারের।