আসন্ন জিম্বাবুয়ে সফরে তিন ফরম্যাটের দলেই ডাক পেয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ম্যাচ জয়ী ঝড়ো ইনিংস খেলে নজর কেড়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তিন বছর পর দলে ফেরা সোহানকে আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজেও ফিনিশারের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে।
এবারের আসরে ১৫ ম্যাচে ৩৮.৪৪ গড়ে ৩৪৬ রান সংগ্রহ করেছেন সোহান। এবং ১৫১.৭৫ স্টাইকরেটই জানান দিচ্ছে এই রান কত দ্রুত তুলেছেন তিনি। ক্রিকেট ভিত্তিক গনমাধ্যম ইএসপিএনকে সোহান জানিয়েছেন তিন বছর আগে দল থেকে বাদ পড়ার পর কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের সাথে উন্নতি নিয়ে কাজ করেই সফল হয়েছেন তিনি।
সোহান মনে করেন এই কোচের সাথে কাজ করার কারণে উন্নতি হয়েছে তার। ফিনিশারের দায়িত্ব পালন করতে ভারসাম্য নিয়েও কঠোর পরিশ্রম করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। আর সব কিছুই তিনি করেছেন এই কোচের অধীনে।
তিনি বলেন, ‘আমি গত দুই বছর ধরে বাবুল স্যারের সাথে আমার ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছি। আমি তাঁর সাথে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমি নিয়মিত তার অধীনে ব্যাটিং অনুশীলন এবং ফিটনেস নিয়ে কাজ করি। তিন বছর আগে আমি যখন বাংলাদেশের হয়ে শেষ বার খেলেছি তখন কী ভাবে উন্নতি করতে হবে বাবুল স্যারের সাথে এটা নিয়ে কথা বলেছি। তিনি আমাকে সব সময় সাহায্য করেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি ইনিংস শেষ করার কথা বলেছিলাম। আমি শেষ বিপিএলের আগে তার সাথে এটা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। বড় শট খেলার জন্য আমার ভারসাম্য নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল। ভারসাম্য যখন ভালো আসে তখন শক্তিও বেশি পাই। তিনি এই দিক থেকে আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন।
নিজকে ফিরে পাওয়ার পর সোহান ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার দল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ম্যানেজমেন্ট ও জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের। সোহান মনে করেন তাকে নিজের মতো করে খেলার স্বাধীনতা দেওয়ার কারণেই ভালো করতে আত্ববিশ্বাস পেয়েছেন তিনি। এছাড়া মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সব সময় পরামর্শ ও খোঁজ নিয়েছেন তার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দল টুর্নামেন্টের আগে ওয়ানডের জন্য করা ছিল। এটা নিয়ে আমারা কিছুটা চিন্তিত ছিলাম। প্রথম দুটি ম্যাচের পরে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমাকে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে এবং দলের হয়ে খেলা শেষ করতে হবে। না হলে এটি কঠিন হয়ে যেত। তবে আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে একটি নির্দিষ্ট ভূমিকায় খেলার স্বাধীনতা দিয়েছে যা আত্মবিশ্বাসী করেছে।
সোহান আরো বলেন, ‘এটি একটি কঠিন সময় এবং হতাশা খুব সহজেই এসে যায়। তবে সিনিয়র খেলোয়াড়রা আমাকে সমর্থন করেছেন। আমি এই এপ্রিলে শ্রীলঙ্কায় মুশফিক ভাইয়ের সাথে অনেক কথা বলেছি। তিনি আমাকে তার অনুশীলনের পদ্ধতি এবং জীবনধারা সম্পর্কে বলেছেন। রিয়াদ ভাই সব সময় আমার খোঁজ নেন।’
২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভালো করেও বাদ পড়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। সোহান জানিয়েছেন এটা তার মনে অনেক দিন ছিল এবং পরের খেলাতে যা প্রভাব ফেলেছে। তাই তিনি সেটা দ্রুত ঝেড়ে ফেলে নিজের কাজে মনোযোগ দেন। সোহান জানিয়েছেন এখন তিনি শুধু নিজের কাজ নিয়েই চিন্তিত।
তিনি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর যখন আমাকে (২০১৮ সালে) জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সত্যি কথা বলতে এটি প্রথম কয়েক মাস আমার মনে গেঁথে ছিল। তবে আমি দ্রুত বুঝতে পেরেছিলাম যে এটা কখনই আমার নিয়ন্ত্রণে ছিল না এবং এটা নিয়ে ভাবার খারাপ লাগার কারণে আমি যেখানেই খেলবো এটা আমাকে প্রভাবিত করবে। আমি আর এখন এগুলো নিয়ে মাথা ঘামাই না। আমি এখন নিজের কাজ নিয়ে উদ্বেলিত ও যথেষ্ট মনোযোগী।