কম পুঁজিতে বেশি লাভ

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কত রানের টার্গেট দেয়াটা ঠিক নিরাপদ? কখনো কখনো দেখা যায় ২০০ রানের টার্গেটও অনেক সহজেই পাড় করে ফেলে দলগুলো। ফলে এই ফরম্যাটে কোন টার্গেটকেই ঠিক নিরাপদ ভাবা যায় না। তবে স্বাভাবিক ভাবে ধরে নিলে ১৭০-১৮০ এই ফরম্যাটে বেশ ভালো স্কোর। যেকোন কন্ডিশনেই এই পুঁজি নিয়ে লড়াই করা যায়।

তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার সিরিজে দেখা গিয়েছে উল্টো চিত্র। এখানে ১২০ রান করাটাই দুই দলের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশই সর্বোচ্চ ১৩১ রান করতে পেরেছিল।

এছাড়া শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের দেয়া ১২৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬২ রানেই অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন আরো কিছু ঘটনা আছে। যেখানে আরো কম রানের পুঁজি নিয়েও জয় পেয়েছে দলগুলো।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সেসব লো স্কোরিং ম্যাচগুলো নিয়েই এই আয়োজন।

  • শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ড: ২০১৪

২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। দুই দলের জন্যই সেটি ছিল বাচা-মরার লড়াই। সেমিফাইনাল খেলতে হলে ওই ম্যাচ জিততেই হতো। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে মাত্র ১১৯ রানের গুটিয়ে যায় লংকানরা। ফলে ভাবা হচ্ছিল সহজ জয়ই তুলে নিবে ব্ল্যাক ক্যাপরা। তবে সবাইকে অবাক করে শ্রীলঙ্কার স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ এক জাদুকরি স্পেল করলেন।

৩.৩ ওভার বল করে মাত্র ৩ রান খরচ করেই তুলে নিলেন ৫ উইকেট। হেরাথের ঘূর্নিতে কাবু হয়ে মাত্র ৬০ রানেই অল আউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। ফলে শ্রীলঙ্কাই সেমি ফাইনালের টিকিট কেটেছিল সেই ম্যাচে। শেষ পর্যন্ত ওই বিশ্বকাপও জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।

  • জিম্বাবুয়ে-পাকিস্তান: ২০২১

কিছুদিন আগেই পাকিস্তানকে বেশ বড় ধাক্কা দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১১৮ রান করে জিম্বাবুয়ে। ফলে সহজ টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ধীরগতিতেই শুরু করে পাকিস্তান। প্রথম ১০ ওভার শেষে তাদের ঝুলিতে ছিল ৪৪ রান।

তবে তখনো তাঁদের সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজম ও অলরাউন্ডার মোহম্মদ হাফিজ ক্রিজে ছিলেন। তবুও শেষ দশ ওভারে জিম্বাবুয়ে বোলারদের সামলাতে হিমসিম খেয়েছে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৯৯ রানেই থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ফলে ১১৮ রান করেও জয় পায় জিম্বাবুয়ে।

  • দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা: ২০১৩

২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা দারুণ বোলিং করে মাত্র ১১৫ রানেই আঁটকে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ওদিকে দক্ষিণ আফ্রিকাও বল করতে নেমে প্রথম ওভারেই শ্রীলঙ্কার ওপেনার দিলশানকে ফিরিয়ে দেয়। এরপর নিয়মিতই উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা।

তবে অন্যপ্রান্তে একাই ইনিংস আঁকড়ে ছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা। শেষ পর্যন্ত এই ব্যাটসম্যানের ঝুলি থেকে আসে ৫৯ রান। তারপরও দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ১১৬ রানের টার্গেট টপকাতে পারেনি লঙ্কানরা। মাত্র ১০৩ রানেই থেমে যায় তাঁদের ইনিংস।

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড: ২০১১

২০১১ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিন্ম স্কোর করেও জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিস গেইল কিংবা কাইরণ পোলার্ডের মত ক্রিকেটারদের ছাড়াই সেদিন খেলতে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১১৩ রানেই গুটিয়ে যায়

তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা যেন দিশে হারা হয়ে যায়। একমাত্র বেন স্টোকস ৩১ রানের একটি ইনিংস খেলেন। এরপরেও সেদিন ২৫ রানের জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

  • জিম্বাবুয়ে-ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০১০

অবাক হলেও সত্যি যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বনিম্ন রান করে জয়ের রেকর্ড জিম্বাবুয়ের। এই তালিকায় আগেও একবার দলটির নাম এসেছে। তবে তাঁদের সেরাটা এখনো বলা বাকি। ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই কীর্তি করেছিল দলটি। আগে ব্যাট করতে নেমে হ্যামিলটন মাসাকাদজার ৪৪ রানে ভর করে ১০৫ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের দেয়া ১০৬ রানের টার্গেটে পৌছাতেও ব্যর্থ হয় শক্তিশালি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০ ওভার ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৭৯ রান করতে পেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফলে সেদিন ২৬ রানের জয় পেয়েছিল দেশটি।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link