‘এটা আমার ব্যর্থতা’

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজেদের শেষ তিনটা সিরিজই দাপটের সাথে জিতেছে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মত দুটি পরাশক্তিও ছিল। তবে সেটা ছিল ঘরের মাঠে মিরপুরের বিতর্কিত রকমের স্লো উইকেটে। যেখানে ব্যাটসম্যানদের জন্য রান করা একটা যুদ্ধের মত হয়ে উঠেছিল। ফলে রাতারাতি বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বড় দল বোলা যাচ্ছিল না। যদিও বিশ্বকাপের আগে অধিনায়ক বেশ কয়েকবার গণমাধ্যমকে বলেছেন তাঁরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন বেশ ভালো দল।

আমরা অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকেই বিশ্বাস করতে চেয়েছিলাম। তবে মিরপুরের বড় দল মুখ থুবড়ে পড়লো মাসকটে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য হাতে গোনা। নেই বললেও ভুল হবেনা। তবুও বলা যায় আজকে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের অন্যতম বাজে দিন। বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের কাছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করলো বাংলাদেশ।

মোটামুটি ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশের টার্গেটটা খুব বেশি বড় ছিল না। ১৪১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাটিং করেছেন দলের সিনিয়র ব্যাটসম্যানরাও। একটা সময় স্ট্রাইক রোটেট করতে পর্যন্ত হিমশিম খাচ্ছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সাকিব আল হাসান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অভিজ্ঞ সেনানী হয়ে আজ ফরম্যাটটার সাথে তাল মেরাতে পারেননি।

তাঁর ২৮ বলে ২২ রানের ইনিংস মোটেই টি-টোয়েন্টি সুলভ ছিল না। ফলে এই মন্থর ইনিংস দলের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অধিনায়ক রিয়াদ যখন বাইশ গজে তখন একটা সময় বাংলাদেশের ওভার প্রতি প্রায় ১০ রান প্রয়োজন। সেই সময়ে দলের এই অভিজ্ঞ কান্ডারি খেলেছেন ২২ বলে ২৩ রানের ইনিংস। ফলে দলও পৌছাতে পারেনি জয়ের বন্দরে।

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের দুজনের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ নিয়ে প্রশ্ন উঠে। সম্মেলনে অকপটে স্বীকার করেছেন এই ইনিংস গুলো কার্যকর ছিল না। আজকে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন তিনি। রিয়াদ বলছিলেন তাঁরা বাউন্ডারি বের করার চেষ্টা করলেও আজ সেটা করতে পারেননি। ফলের সময়ের সাথে সাথে ম্যাচ স্কটল্যান্ডের দিকে হেরে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আজকে ভাল ব্যাটিং করতে পারিনি। আজকে ম্যাচ জিততে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা।’

এছাড়া পরবর্তী ম্যাচ গুলোতে ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করারও আভাষ দেন অধিনায়ক। তাঁরা আরো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে চান। এই প্রসঙ্গে আবার আসে নিয়মিত পারফর্মার আফিফের কথা। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ ব্যাটিং করলেও তাঁকে বারবার ছয়-সাতেই পাঠানো হচ্ছে। আজকেও ছয় নম্বরে নেমে ১২ বলে ১৮ রানের সাবলীল ইনিংস খেলেছেন।

তাঁকে ভবিষ্যতে টপ অর্ডারে পরিকল্পনা করা হবে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় অধিনায়কের কাছে। তবে সে ব্যাপারে আশার কথা শোনাননি রিয়াদ। দল নাকি আফিফকে এখন ছয় নম্বরেই ভাবছে। ভবিষ্যতে টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করলে হয়তো উপরের দিকে দেখা যেতে পারে আফিফকে। তবে এখনই সেই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

তিনি বলেন, ‘আফিফ এখন ছয়ে ব্যাটিং করছে। আমরা সেভাবেই এখন পর্যন্ত ওকে নিয়ে পরিকল্পনা করছি। আর আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। তবে, ওকে আমরা যোগ্য মনে করি। যদি আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে ওকে ওপরের দিকে খেলানো দরকার – তখন সেভাবে পরিকল্পনা করবো।’

তবে এতকিছুর পরেও রিয়াদ হাল ছাড়ছেন না। তিনি তাঁর দলই নিয়ে সন্তুষ্ট। আজকের দিনটাকে শুধু একটা খারাপ দিন হিসেবেই দেখতে চান তিনি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এমন হারের পরেও রিয়াদ মনে করেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে ভালো দল। শুধু নিজেদের সেরাটা দেয়া বাকি।

হয়তো এবারো রিয়াদকে বিশ্বাস করতে চাইবে সমর্থকরাও। রিয়াদ বলেন, ‘একটা ম্যাচে খারাপ অর্থ এই না যে আমরা যোগ্য নই। আমি এখনও বিশ্বাস করি, এখান থেকেও আমরা নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলা সম্ভব।’

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link